এক আলেম ও শিষ্য
একজন বিজ্ঞ আলেম ছিলেন। যার অনেক ছাত্র ছিল। যখনই তার কাছে নতুন কোন শিষ্য আসতো তিনি তখন তার পরীক্ষা নিতেন।
তিনি কিছু তোতা পাখি পালতেন। আর পাখিগুলোকে তিনি একটি কথা শিক্ষা দিয়েছিলেন, কথাটি হল; “শিকারি আয়েগা, দানা ডালেগা, জাল বিছায়েগা, ফাসনা নেহি”। অর্থাৎ “শিকারি আসবে, খাবার দিবে, জাল পাতবে, ফেঁসে যেও না।”
যখনই নতুন কোন ছাত্র আসতো তখনই তিনি তাকে কিছু দানা আর একটি জাল দিয়ে বলতেন, “যাও ঐ গাছের নিচ থেকে কিছু তোতা পাখি ধরে নিয়ে আসো।”
পাখিগুলো মানুষ দেখামাত্রই এই বলে গান গাইতে শুরু করতো যে, “শিকারি আয়েগা, দানা ডালেগা, জাল বিছায়েগা, ফাসনা নেহি”। তখন বেশিরভাগ ছাত্রই ফিরে আসতো এই ভেবে যে, এত চালাক পাখি ধরা যাবে না !
কিন্ত যদি কোন ছাত্র জাল পাততো আর দানা দিতো তবে দেখতো যে, পাখিগুলো মুখে ঐ কথা বলছে ঠিকই কিন্ত দানা খেতে আসছে আর জালে ফেঁসে যাচ্ছে। অর্থাৎ তাদের মুখের কথা তাদের কোন কাজেই আসছে না।
এই পাখিগুলো আসলে কি বলছে তারা সেটা নিজেরাই জানে না। পাখিগুলো জানে না- ‘শিকারি’ কি জিনিস! ‘জাল’ কি জিনিস! ‘ফাসনা’ কি জিনিস! তাই তারা মুখে যতই গান গাওক না কেন, তাও জালে ফেঁসে মৃত্যু ডেকে আনছে।
[গল্পটি কাসিদাতুল আরবিয়া নামক গ্রন্থের অনুবাদ। ]
শিক্ষাঃ-আজকের জামানায় আমাদের অবস্থাও ঠিক যেন তোতা পাখিদের মতই হয়ে গেছে। আমরা মুখে ‘লা~ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ বলে সাক্ষ্য দিচ্ছি, কিন্তু আমরা এর মর্ম জানি না, প্রত্যেক নামাজে সূরা ফাতিহা পড়ি কিন্তু আমরা বুঝি না এর ভিতর আল্লাহ কি বলতে চেয়েছেন।
একই সাথে আমরা সুদ-ঘুষ, পরনিন্দা, অহংকার, যিনা, গীবত ও অসংখ্য হারাম কাজ করছি আর তোতা পাখির মতই আবার কালেমা বলছি আর নিজেকে মুসলমান হিসেবে দাবীও করছি! কাজেই আমাদের এই সাক্ষ্যদান তোতা পাখির মতন। আমরা মুখে কালেমা জপার পরেও শিকারির জালে ফেঁসে যাচ্ছি।
আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে সঠিক দ্বীন শিখে, কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ মোতাবেক জীবন গড়ার তৌফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমীন




Users Today : 55
Users Yesterday : 357
This Month : 55
This Year : 171926
Total Users : 287789
Views Today : 7436
Total views : 3414999