‘একজন ইমামের গল্প- ০১’

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

অসংখ্য মনীষিদের মধ্যে একটি নাম আলা হযরত। আমাদের ইমামগণের মধ্যে যিনি অন্যতম একজন। যিনি ১৪শ শতাব্দীর একজন মুজাদ্দিদ ছিলেন। যার অন্তর পরিপূর্ণ ছিল ইশকে মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দ্বারা। আমাদেরকে অসংখ্য কিতাব লিখনীর মাধ্যমে যিনি সিরাতে মোস্তাকিম এর পথ দেখিয়েছেন। শিখিয়ে গেছেন প্রিয় নবীর সম্মান, ভালোবাসা। 

সামান্য কিছু লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করার চেষ্টা করব সেই মহান ব্যক্তিত্বের জীবনের কিছু অংশ।

আলা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, ইমাম আহমদ রেযা খান বেরলী রহ. ১০ই শাওয়াল ১২৭২ হিজরি ১৪ই জুন ১৮৫৬ ইং রোজ শনিবার যোহরের সময় বেরেলী শহরের যাচুলী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। জন্ম বৎসরের হিসেবে তাঁর ঐতিহাসিক নাম ‘আল-মুখতার’। [১]

আলা হযরত রহ. নিজের জন্ম সাল ২৮ পারার সূরা মুজাদালার ২২ নং আয়াত থেকে বের করেন। এই আয়াতে কারীমার ইলমে আবজাদ মোতাবেক সংখ্যা ১২৭২ আর হিজরি সন মোতাবেক এটিই তাঁর জন্ম সাল। ‘মলফুজাতে আলা হযরত’ এর ৪১০ পৃষ্ঠায় সায়্যিদি আলা হযরত রহ. বলেনঃ সকল প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার। 

আমার জন্ম তারিখ এই আয়াতে কারীমায় বিদ্যমান- ‘এরা ঐসব লোক যাদের অন্তরে আল্লাহ তায়ালা ঈমান অংকিত করে দিয়েছেন এবং তাঁর নিকট থেকে রুহ দ্বারা তাঁদের সাহায্য করেছেন।’

বিস্ময়কর শৈশবকাল: সাধারণত প্রত্যেক যুগের বাচ্চাদের অবস্থা আজকাল বাচ্চাদের অবস্থার মত যে, সাত আট বৎসর পর্যন্ত তাদের কোন কথার হুশ থাকেনা এবং তারা কোন বিষয়ের চুগান্ত পর্যায়ে পৌঁছতে পারে না। তবে আ’লা হযরত এর শৈশবকাল খুবই গুরুত্ব বহনকারী ছিল। শৈশবকাল এবং কম বয়সের বুদ্ধিমত্তা ও স্মরণশক্তির অবস্থা এরকম ছিল যে, মাত্র সাড়ে ৪ বছরের ছােট্ট বয়সে কুরআন শরীফ সম্পূর্ণ নাযেরা পড়ার নেয়ামত লাভে ধন্য হন।

৬ বছর বয়সে রবিউল আওয়ালের পবিত্র মাসে মিম্বরে আরােহণ করে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষয়বস্তুর উপর এক বড় ইজতিমাতে চমৎকার বয়ান করে ওলামায়ে কেরাম এবং মাশায়েখে ইজামদের প্রশংসা এবং বাহবাহ অর্জন করেন। এই বয়সে তিনি বাগদাদ শরীফের ব্যাপারে দিক নির্ধারণ করে নেন, আর সারা জীবন হুযুর গাউসে আযমের (রাদ্বী.) মােবারক শহরের দিকে কখনাে পাদ্বয়কে প্রসারিত করেননি। 

নামাযের প্রতি তাঁর খুবই ভালবাসা ছিল। এমনকি পাঁচ ওয়াক্ত নামায জামাআত সহকারে তাকবিরে উলাকে সংরক্ষণ করে মসজিদে গিয়ে আদায় করতেন। যখনই কোন মহিলা সামনে পড়ে যেত তবে তৎক্ষণাৎ দৃষ্টিকে নত করে মাথা ঝুঁকিয়ে নিতেন। যেন সুন্নাতে মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল, যেটার বহিঃপ্রকাশ করতে গিয়ে হুযুর পুরনূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মহান খেদমতে এভাবে সালাম পেশ করেন: 

‘নিছি আখাে কি শরম ও হায়া পর দরূদ, উচি বিনি কি রিফআত পে লাখাে সালাম’

আ’লা হযরত রহ. ছােটবেলায় এমন তাকওয়া অর্জন করেছিলেন যে, চলার সময় পাদ্বয়ের আওয়াজও শুনা যেতনা। সাত বছর বয়স থেকেই রমজানুল মােবারক মাসের রােযা রাখা শুরু করেন। 

রেফারেন্সঃ

[১] হায়াতে আলা হযরত, ১ম খন্ড ৫৮ পৃষ্ঠা। 

[ ঘটনাগুলো সংগ্রহ করতে সাহায্য নিয়েছি আমীরে আহলে সুন্নাত দা.বা. এর লিখিত কিতাব ‘ইমাম আহমদ রযার জীবনি’ এর। ]

‘একজন ইমামের গল্প- ০১’

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment