ঋণদাতার যাকাত এবং ঋণগ্রহিতার যাকাত দেওয়ার পদ্ধতি

পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।

ঋণদাতার যাকাত ও ঋণ গ্রহিতার যাকাত সম্পর্কে নিচে বর্ণনা করা হলো:

ঋণদাতার উপর দেয়া ঋণের যাকাত দিতে হবে কিনা?

ঋণদাতার ঋণ দুই অবস্থায় থাকে- (১) আদায়যোগ্য ঋণ (২) আদায় অযোগ্য ঋণ উভয়টির হুকুম ভিন্ন। যেমন-

(ক) আদায়যোগ্য ঋণ। আদায় হওয়ার পর অন্যান্য যাকাতযোগ্য সম্পদের সাথে যোগ করে যাকাত প্রদান করতে হবে।

১. যে ঋণ নগদে বা কোন দ্রব্যের বিনিময়ে কারো কাছে পাওনা হয়, এরূপ ঋণ আদায় হওয়ার পর যাকাত দিতে হবে এবং বিগত বৎসর সমূহেরও যাকাত প্রদান করতে হবে।

২. যে পাওনা কোন দ্রব্য বা নগদ ঋণের বিপরীতে নয়, যেমন উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অস্থাবর সম্পদ, দান, অছিয়ত, মোহরানার অর্থ ইত্যাদি বাবদ প্রাপ্ত হয়। এরূপ ক্ষেত্রে আদায়ের পর যাকাত ধার্য হবে। এগুলোর উপর বিগত বৎসরসমূহের যাকাত প্রদান করতে হবে না।

(খ) আদায় অযোগ্য বা আদায় হবার ব্যাপারে সন্দেহ থাকলে সে ঋণ যাকাতের হিসাবে আসবে না। যদি কখনও উক্ত ঋণের টাকা আদায় হয়, তবে কেবলমাত্র ১ (এক) বছরের জন্য উহার যাকাত দিতে হবে।

ঋণগ্রহিতার উপর যাকাত প্রাপ্ত ঋণের যাকাত দিতে হবে কি না?

ঋণগ্রহিতার প্রাপ্ত ঋণ কয়েক ধরণের হতে পারে। যেমন-

(ক) ঋণগ্রহিতার ঋণের টাকা মোট যাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে বাদ যাবে। কিন্তু যদি ঋণগ্রহিতার মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত স্থায়ী সম্পত্তি থাকে। যেমন- অতিরিক্ত বাড়ী, দালান, এপার্টমেন্ট, জমি, মেশিনারী, যানবাহন, গাড়ী ও আসবাবপত্র ইত্যাদি যা দ্বারা এরূপ ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম, তবে উক্ত ঋণ যাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে বাদ যাবে না।

(খ) স্থাবর সম্পদের উপর কিস্তি ভিত্তিক ঋণ (যেমন-হাউজিং লোন ইত্যাদি) যাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে বাদ যাবে না। তবে বার্ষিক কিস্তির টাকা অপরিশোধিত থাকলে তা যাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে বাদ যাবে।

(গ) ব্যবসায়ে বিনিয়োগের জন্য ঋণ নেওয়া হলে উক্ত ঋণের টাকা যাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে বাদ যাবে। কিন্তু যদি ঋণগ্রহিতার মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত স্থায়ী সম্পত্তি থাকে তবে উক্ত ঋণ যাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে বাদ যাবে না।

(ঘ) শিল্প-বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঋণের টাকা যাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে বাদ যাবে। তবে যদি ঋণগ্রহিতার মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত স্থায়ী সম্পত্তি থেকে উক্ত ঋণ পরিশোধ করা যায় তবে তা যাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে বাদ যাবে না।

যদি অতিরিক্ত স্থায়ী সম্পত্তির মূল্য ঋণের পরিমাণের চেয়ে কম হয়, তবে ঋণের পরিমাণ থেকে তা বাদ দিয়ে বাকী ঋণের টাকা যাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে বাদ যাবে। বিলম্বে প্রদেয় বা পুনঃতপসিলিকৃত ঋণের বেলায় শুধুমাত্র ঋণের বার্ষিক অপরিশোধিত কিস্তি যাকাতযোগ্য সম্পদ থেকে বাদ যাবে।

ইসলামী গবেষণা বিভাগ

বাগদাদী ফাউন্ডেশন, কুমিল্লা- ৩৫০০, বাংলাদেশ।

পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!

Leave a Comment