ইয়াজিদ বিষয়ে ইমাম আজম আবু হানিফা রহ. এর নীরবতাই ইয়াজিদের প্রতি ইমামে আজমের চরম ঘৃণা প্রকাশ।
ইয়াজিদের বিষয়ে ইমামে আজম রহ. এঁর নীরবতাকে কেন্দ্র করে একটি ভুল ধারণা রয়েছে। ইমামে আজম রহ. এঁর ইয়াজিদ বিষয়ে এই নীরবতা ইয়াজিদের কুফরকে স্পষ্ট করে তোলে। তাঁর এই নীরবতাই ইয়াজিদের কুফরী বিষয়ে আমাদের উপলব্ধীকে বদ্ধমূল করে। ইমাম যায়দ বিন আলী বিন হুসাইন রহ. উমাইয়া শাসক হিশামের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হলে ইমামে আজম আবু হানিফা রহ. ফতোয়া জারি করেন যে, ইমাম যায়দ বিন আলি বিন হুসাইন রহ. এঁর পক্ষে লড়াই রাসূলুল্লাহ্ এঁর পক্ষে বদর যুদ্ধে লড়াই করার অনুরূপ। এখানে প্রতীয়মান হচ্ছে ইমামে আজম রহ. যুদ্ধে ইমাম যায়দ বিন আলি রহ. এঁর বিরুদ্ধে উমাইয়া শাসক হিশাম বিন আব্দুল মালিকের অবস্থানকে কুফ্ফারের সাথে তুলনা দিয়েছেন। কাজেই ইমামে আজম রহ. এঁর নীরবতাকে আমরা ইয়াজিদের বিপরীতে কুফরীর প্রতি সমর্থন ধরে নিতে পারি যদিও তিনি সরাসরি তা বলেন নি। হিশামের তুলনায় ইয়াজিদ চরম জঘন্য, কুখ্যাত ও নিন্দনীয় ছিল।
ইমাম আবু হানিফা রহ. এঁর সময়কালে বিশেষত শিয়ারা ইয়াজিদকে কাফির বলে নিন্দা ও অভিশাপ দিত। ইমামে আজম রহ. যদি তা সমর্থন না করতেন তাহলে তিনি ইয়াজিদকে উদ্দেশ্য করে কাফির নিন্দাবাদ ও অভিশাপের দোয়া করার তৎকালিন ব্যাপক চর্চার বিরোধীতা করে শিয়াদের খণ্ডনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতেন। অথচ তিনি তখন নীরব ভূমিকা পালন করেন। সুতরাং তাঁর নীরবতাকে ইয়াজিদের কুফরী বা তার প্রতি অভিশাপের দোয়া করার বিষয়কে প্রত্যাখ্যান না করে সমর্থনকে দৃঢ় করে।
[সূত্রঃ আবু জুহরা, হায়াত ওয়া আসর, পৃষ্ঠা ৩৬-৩৭]।
ইমাম আবু হানিফা রহ. যদি হিশামের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে না জানতেন তবে তিনি কখনো হিশামকে আবু লাহাব আর আবু জাহেলের সাথে তুলনা করতেন না। অতএব, ইমাম আজম রহ. এঁর আক্বিদা হচ্ছে চরম অবাধ্যতা ইমানকে বরবাদ করে দেয়।
প্রিয় পাঠক, সুন্নি নামধারী ইয়াজিদ প্রেমিকেরা ফিকাহ্ শাস্ত্রের একটি নীতি বা উসূল খুব ভাল করেই জানে যে, কোন বিষয়ে ফিকাহ্ শাস্ত্রে “সুকুত বা নীরবতা” কে সে বিষয়ে “হ্যাঁ বা সম্মতি” কিংবা সে বিষয়টি “অনুমোদিত” বলে ধরে নেয়া হয়। কিন্তু এ প্রেক্ষাপটে সুন্নি নামধারী সে সকল এজিদ প্রেমিকেরা ফিকাহ্ শাস্ত্রের এই উসুলকে নিজ স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য পাশ কাটিয়ে “না বা অসম্মতিসূচক” কিংবা “অননুমোদিত” বলে গণ্য করে ফেত্না ছড়াতে ব্যস্ত রয়েছে।