পোষ্টটি অন্যকে পড়ার সুযোগ করে দিতে শেয়ার করুন প্লিজ।
الفصل الأول: في حقيقة الإيمان
প্রথম অনুচ্ছেদ:ইমানের হাকীকত
(হাদীস:৫১টি)
1- الإيمان: “أن تؤمن بالله وملائكته وكتبه ورسله وتؤمن بالجنة والنار والميزان وتؤمن بالبعث بعد الموت وتؤمن بالقدر خيره وشره”. (هب عن عمر)
ইমান হলো এই যে, তুমি বিশ্বাস স্থাপন করবে- আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি, তার রাসূলদের প্রতি। তুমি বিশ্বাস স্থাপন করবে জান্নাত, জাহান্নাম এবং মীযানের প্রতি। বিশ্বাস স্খাপন করবে মৃত্যুর পর পূণরুত্থানের প্রতি। আরো বিশ্বাস স্থাপন করবে তাকদীরের ভাল-মন্দের প্রতি।
2- الإيمان ” معرفة بالقلب وقول باللسان وعمل بالأركان “. (طب عن علي) .
ইমান হলো অন্তর দিয়ে আল্লাহকে চেনা, মুখ দ্বারা স্বীকার করা এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা আমল করা।
3- الإيمان بالله: “الإقرار باللسان وتصديق بالقلب وعمل بالأركان” (الشيرازي في الألقاب عن عائشة) .
আল্লাহর প্রতি ইমান হলো- মুখের স্বীকারোক্তি, অন্তরের সত্যায়ন এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্বারা আমল করা।
4 – “الإيمان بالقلب واللسان والهجرة بالنفس والمال” (عبد الخالق بن زاهر الشحابي في الأربعين.
যবান ও অন্তর দ্বারা ইমান লাভ হয় আর জান ও মাল দ্বারা হিজরত।
5 – الإيمان: ” أن تؤمن بالله وملائكته وكتبه وبلقائه وبرسله وتؤمن بالبعث” (حم ق هـ عن أبي هريرة) .
ইমান হলো এই যে, তুমি বিশ্বাস স্থাপন করবে- আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি, তার সাক্ষাতের প্রতি, তার রাসূলদের প্রতি। আরো বিশ্বাস স্খাপন করবে মৃত্যুর পর পূণরুত্থানের প্রতি।
6 – “آمركم بأربع، وأنهاكم عن أربع، آمركم بالإيمان بالله وحده أتدرون ما الإيمان بالله؟ شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله، وإقام الصلاة وإيتاء الزكاة وصيام رمضان وأن تؤدوا خمس ماغنمتم، وأنهاكم عن الدباء والنقير والحنتم والمزفت احفظوهن وأخبروا بهن من وراءكم” (ق عن ابن عباس)
আমি তোমাদেরকে চারটি বিষয়ের নির্দেশ দিচ্ছি আর চারটি বিষয় থেকে নিষেধ করছি। আমি তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছি একক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর উপর ইমান আনার। তুমি কি জান আল্লাহর প্রতি ইমান আনার অর্থ কি? আল্লাহর প্রতি ইমান আনার অর্থ হলো এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং মুহাম্মাদ (সা) আল্লাহর রাসূল। (আর নির্দেশ দিচ্ছি) নামায কায়েম করার, যাকাত প্রদান করার, রমজানের রোযা রাখার এবং (আরো একটি অতিরিক্ত বিষয়) গনীমতের মালের পাঁচ ভাগের এক ভাগ দান করার। আর আমি তোমাদেরকে নিষেধ করছি (মদের জন্য প্রস্তুতকৃত) কদুর খোল দ্বারা তৈরিকৃত বরতন, মাটির সবুজ পাত্র, কাঠের পাত্র এবং তৈলাক্ত পাত্র (ব্যবহার করা) থেকে। এই কথাগুলোকে স্মরণ রাখ এবং তোমাদের আশপাশের লোকদেরকেও তা জানিয়ে দাও।
7 – “آمركم بأربع وأنهاكم عن أربع اعبدوا الله ولا تشركوا به شيئا وأقيموا الصلاة وآتوا الزكاة وصوموا رمضان وأعطوا الخمس من الغنائم، وأنهاكم عن أربع عن الدباء والخنتم والمزفت والنقير”.(حم م عن أبي سعيد)
আমি তোমাদেরকে চারটি বিষয়ের নির্দেশ দিচ্ছি আর চারটি বিষয় থেকে নিষেধ করছি। আমি তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছি- তোমরা আল্লাহর ইবাদত করবে এবং তার সাথে কিছু শরীক করবে না। সালাত কায়েম করবে, যাকাত আদায় করবে, রমজানের রোযা রাখবে এবং গনীমতের মালের এক পঞ্চমাংশ দান করবে। আর আমি তোমাদেরকে নিষেধ করছি (মদের জন্য প্রস্তুতকৃত) কদুর খোল দ্বারা তৈরি বরতন, কাঠের পাত্র, তৈলাক্ত পাত্র এবং মাটির সবুজ পাত্র (ব্যবহার করা) থেকে।
8- “بحسب امرئ من الإيمان أن يقول رضيت بالله ربا وبالإسلام دينا وبمحمد صلى الله عليه وسلم رسولا” (طس عن ابن عباس) .
কোন ব্যক্তির ইমানের জন্য এটা বলা যথেষ্ট যে- আমি আল্লাহকে প্রতিপালক, ইসলামকে দীন এবং মুহাম্মদ (সা) কে রাসূল হিসাবে পেয়ে সন্তুষ্ট।
9 – “ذاق طعم الإيمان من رضي بالله ربا وبالإسلام دينا وبمحمد رسولا” (حم م ت عن العباس بن عبد المطلب) .
ঐ ব্যক্তি ইমানের স্বাদ পেয়েছে- যে আল্লাহকে প্রতিপালক, ইসলামকে দীন এবং মুহাম্মদ (সা) কে রাসূল হিসাবে পেয়ে সন্তুষ্ট।
10 – “ثلاث من فعلهن فقد طعم طعم الإيمان من عبد الله وحده وأنه لاإله إلا الله وأعطى زكاة ماله طيبة بها نفسه رافدة عليه كل عام ولايعطي الهرمة ولا الرديئة ولا المريضة ولا الشرط اللئيمة ولكن من أوسط أموالكم فإن الله لم يسألكم خيره ولا يأمركم بشره وزكى نفسه” (د عن عبد الله بن معاوية العامري
যে ব্যক্তি তিনিটি কাজ করবে নিশ্চিত সে ইমানের স্বাদ পাবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত থাকে এবং আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই তার স্বীকৃতি প্রদান করে। প্রতি বছর সন্তুষষ্টচিত্তে নিজের মালের যাকাত প্রদান করে এবং বৃদ্ধ বয়সের, রোগগ্রস্ত (যাকাতের পশু), ত্রুটিপূর্ণ ও নিকৃষ্ট মাল প্রদান করে না। বরং মধ্যম ধরণের মাল প্রদান করে। আল্লাহ তোমাদের উৎকৃষ্ট সম্পদ চান না আবার নিকৃষ্ট মাল প্রদান করতেও বলেন না।
11 – “ليس الإيمان بالتمنى ولا بالتحلي، ولكن: هو ما وقر في القلب وصدقه العمل” (ابن النجار فرص عن أنس) .
ইমান তামান্না বা বেশভূষার মাধ্যমে হাসিল হয় না বরং ইমান তো হলো এমন বিষয় যা অন্তরে পরিপক্ক হয়- আর আমল তার সত্যায়ন করে।
12 – “إن لكل شيء حقيقة ومابلغ عبد حقيقة الإيمان حتى يعلم أن ما أصابه لم يكن ليخطئه وما أخطاه لم يكن ليصيبه” (حم طب عن أبي الدرداء) الإكمال.
প্রত্যেক জিনিসের একটি হাকীকত আছে আর কোন বান্দা ইমানের হাকীকত পর্যন্ত ঐ সময় পর্যন্ত পৌছতে পারে না, যে পর্যন্ত সে এ বিষয়টি ভালভাবে জেনে না নিবে যে, যে মুসিবত তার উপর আপতিত হয়েছে তা কখনো তাকে ভুল করত না। আর যা তার উপর আপতিত হয়নি তা তার উপর কখনও আপতিত হত না।
13 – “الإيمان أن تؤمن بالله وملائكته والكتاب والنبيين وتؤمن بالقدر” (ن عن أبي هريرة وأبي ذر معا) .
ইমান হলো এই যে, তুমি বিশ্বাস স্থাপন করবে আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবের প্রতি এবং তার নবীদের প্রতি। আরো বিশ্বাস স্থাপন করবে তাকদীরের প্রতি।
14 – “الإيمان أن تؤمن بالله واليوم الآخر والملائكة والكتاب والنبيين والموت والحياة بعد الموت وتؤمن بالجنة والنار والحساب والميزان وتؤمن بالقدر خيره وشره فإذا فعلت ذلك فقد آمنت” (حم عن أبي عامر وأبي مالك) (ن عن أنس) (ابن عساكر عن عبد الرحمن ابن غنم) .
ইমান হলো এই যে, তুমি বিশ্বাস স্থাপন করবে আল্লাহর প্রতি, আখিরাতের প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবের প্রতি, তার নবীদের প্রতি, মৃত্যুর প্রতি এবং মৃত্যুর পর পূণর্জীবনের প্রতি। আরো বিশ্বাস স্থাপন করবে জান্নাত ও জাহান্নামের প্রতি, হিসাব ও মীযানের প্রতি। আরো বিশ্বাস স্থাপন করবে তাকদীর বা ভাগ্যের ভাল-মন্দের প্রতি। যখন তুমি এগুলোর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে নেবে তখন তুমি নিশ্চিত ইমান আনয়ন করলে।
15 – “أربع من كن فيه فهو مؤمن ومن جاء بثلاث وكتم واحدة فهو كافر شهادة أن لاإله إلا الله وأني رسول الله وأنه مبعوث من بعد الموت وإيمان بالقدر خيره وشره” (تمام وسمويه كر عن أبي سعيد) .
যার মধ্যে চারটি বিষয় থাকবে সে নিশ্চিত মুমিন। আর যার মধ্যে তিনটি থাকবে আর একটি ছেড়ে দিবে সে নিশ্চিত কাফির। এই কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং আমি [মুহাম্মদ (সা)] আল্লাহর রাসূল এবং মৃত্যুর পর তাকে পূনর্জীবিত করা হবে। আর তাকদীরের ভাল-মন্দের প্রতি ইমান আনয়ন করা।
16 – ” أربع لم يجد رجل طعم الإيمان حتى يؤمن بهن أن لا إله إلا الله وأني رسول الله بعثني بالحق وأنه ميت ثم مبعوث من بعد الموت ويؤمن بالقدر كله” (كر عن علي) .
চারটি বিষয় এমন যে, তার উপর ইমান আনা ব্যতীত বান্দা ইমানের স্বাদ পেতে পারে না। এই কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং আমি [মুহাম্মদ (সা)] আল্লাহর রাসূল- যিনি আমাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন। এটাও যে, তাকে মৃত্যুবরণ করতে হবে এবং মৃত্যুর পর পূণরায় জীবিত করা হবে। আর তাকদীর বা ভাগ্যের সকল বিষয়ের প্রতি।
17- ” الإسلام أن تسلم قلبك ويسلم المسلمون من لسلنك ويدك قيل فأي الإسلام أفضل قال الإيمان. قيل وما الإيمان؟ قال أن تؤمنوا بالله وملائكته وكتبه ورسله والبعث بعد الموت. قيل فأي الإيمان أفضل؟ قال: الهجرة. قيل: وما الهجرة؟ قال: أن تهجر السوء. قيل: فأي الهجرة أفضل؟ قال: الجهاد. قيل: وما الجهاد؟ قال: أن تقاتل الكفار إذا لقيتهم قيل فأي الجهاد أفضل؟ قال: من عقر جواده وأهريق دمه. ثم عملان أفضل الأعمال إلا من عمل بمثلهما: حجة مبرورة أو عمرة”. (حم طب عن عمرو بن عبسه) ورجاله ثقات.
ইসলাম হলো এই যে, তুমি তোমার অন্তরকে (নিজেকে) আল্লাহর সোপর্দ করবে। আর তোমার হাত ও যবান থেকে অপর মুসলমানকে নিরাপদ রাখবে। জিজ্ঞাসা করা হলো কোন ইসলাম উত্তম? তিনি বললেন, ইমান। জিজ্ঞাসা করা হলো ইমান কি? তিনি বললেন, ইমান হলো এই যে- তুমি বিশ্বাস স্থাপন করবে আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি, তার রাসূলদের প্রতি এবং মৃত্যুর পর পূণর্জীবনের প্রতি। জিজ্ঞাসা করা হলো কোন ইমান উত্তম? তিনি বললেন, হিজরত। জিজ্ঞাসা করা হলো হিজরত কি? তিনি বললেন, গুনাহ ছেড়ে দেওয়া। জিজ্ঞাসা করা হলো কোন হিজরত উত্তম, তিনি বললেন, জিহাদ। জিজ্ঞাসা করা হলো জিহাদ কি? জিহাদ হলো এই যে, যখন কাফিরদের সাথে তোমার মুকাবিলা হবে তখন তুমি তাদেরকে হত্যা করবে। জিজ্ঞাসা করা হলো কোন জিহাদ উত্তম? তিনি বললেন, যেই জিহাদে মুজাহিদের ঘোড়া যখমী হয় এবং তার রক্ত বয়ে যায়। অতঃপর এগুলোর পর দুটি আমল উত্তম এটা ব্যতীত যে, কেউ অনুরুপ আমল করে- হজ্জে মাবরূর (মকবুল হজ) অথবা উমরা।
18 – “حقيقة الإسلام أن تشهد أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله، وتقيم الصلاة، وتؤتي الزكاة وتصوم رمضان، وتحج البيت إن استطعت إليه سبيلا”. (م عن عمر) .
ইসলামের হাকীকত হলো তুমি এই সাক্ষ্য প্রদান করো যে- ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নেই এবং মুহাম্মাদ (সা) আল্লাহর রাসূল।’ নামায কায়েম কর, যাকাত আদায় কর, রমজানের রোযা রাখ আর যদি সফরের সামর্থ্য থাকে তবে বায়তুল্লাহর হজ পালন কর।
19 – “الإسلام علانية والإيمان في القلب” (ش عن أنس) .
ইসলাম হলো প্রকাশমান বিষয় আর ইমান হলো অন্তরের বিষয়।
20 – ” إن للإسلام صنوا ، ومنارا كمنار الطريق ورأسه، وجماعه شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمدا عبد ورسوله، وإقام الصلاة، وإيتاء الزكاة، وتمام الصوم” (طب عن أبي الدرداء) .
ইসলামের দৃষ্টান্ত হলো পথের দৃষ্টান্তের মত। পথের যেমন একটা মূল থাকে তেমনি ইসলামের মূল বা চূড়া হলো এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর বান্দা এবং রাসূল। আর নামায কায়েম করা, যাকাত আদায় এবং (রমজানের) সব রোযা রাখা।
21 – “بني الإسلام على خمس: شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله وإقام الصلاة وإيتاء الزكاة وحج البيت وصوم رمضان” (حم ق ت ن عن ابن عمر)
ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বিষয়ের উপর প্রতিষষ্ঠিত। এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর রাসূল। নামায কায়েম করা। যাকাত আদায় করা। বায়তুল্লাহর হজ করা এবং রমজানের রোযা রাখা।
22 – “رأس هذا الأمر الإسلام، ومن أسلم سلم، وعموده الصلاة، وذروة سنامه الجهاد، لا يناله إلا أفضلهم” (طب عن معاذ) .
এই দীনের মূল হলো ইসলাম। আর যে ইসলাম গ্রহণ করল সে নিরাপত্তা লাভ করল। আর এই দীনের স্তম্ভ হলো নামায আর উচ্চতা হলো জিহাদ। উত্তম লোক ব্যতীত তা কেউ লাভ করতে পারে না।
23- “عرى الإسلام وقواعد الدين ثلاثة عليهن أسس الإسلام من ترك واحدة منهن فهو بها كافر حلال الدم: شهادة أن لا إله إلا الله والصلاة المكتوبة وصوم رمضان” (ع عن ابن عباس) .
ইসলাম সব দোষ থেকে পবিত্র। আর দীনের তিনটি ভিত্তি রয়েছে যার উপর ইসলামের ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যে এর মধ্যে একটিও ছেড়ে দিবে সে কাফির, তার রক্ত হালাল। তা হলো ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর’ সাক্ষ্য প্রদান করা, ফরয নামায ও রমজানের রোযা।
24 – “يا عدي ابن حاتم أسلم تسلم أشهد أن لا إله إلا الله وأني رسول الله وتؤمن بالأقدار كلها خيرها وشرها، حلوها ومرها” (هـ عن عدي بن حاتم) .
হে আদী ইবনে হাতিম! ইসলাম গ্রহণ কর। শান্তি ও নিরপত্তা লাভ কবে। সাক্ষ্য প্রদান কর এই কথার যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই আর আমি [মুহাম্মদ (সা)] আল্লাহর রাসূল। আর ইমান আনয়ন কর তাকদীর বা ভাগ্যের সবকিছুর প্রতি- চাই তা ভাল হোক অথবা মন্দ, মিষ্ট হোক অথবা তিক্ত।
25 – ” الإسلام إقام الصلاة وإيتاء الزكاة وحج البيت وصوم شهر رمضان والاغتسال من الجنابة” (د عن عمر)
ইসলাম হলো নামায কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, বায়তুল্লাহর হজ করা, রমজানের রোযা রাখা এবং জানাবত বা অপবিত্রতা থেকে গোসল করা।
26 – “الإسلام أن تعبد الله ولا تشرك به شيئا وتقيم الصلاة وتؤتي الزكاة المفروضة وتصوم رمضان وتحج البيت” (حم ق هـ عن أبي هريرة وأبي ذر معا)
ইসলাম হলো এই যে- তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে আর তার সাথে কোন কিছু শরীক করবে না। নামায কায়েম করবে। ফরয যাকাত আদায় করবে। রমজানের রোযা রাখবে এবং বায়তুল্লাহর হজ করবে।
الإكمال
27 – “بني الإسلام على خمس شهادة أن لا إله إلا الله والصلاة وصيام رمضان فمن ترك واحدة منهن كان كافرا حلال الدم” (طب عن ابن عباس) .
ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বিষয়ের উপর প্রতিষ্টিত। এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই। সালাত ও রমজানের সিয়াম (এবং হজ ও যাকাত)। যে ব্যক্তি এর কোন একটি ছেড়ে দিবে সে কাফির, তার রক্ত হালাল।
28 – “بني الإسلام على خمس شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمدا عبده ورسوله وإقام الصلاة وإيتاء الزكاة وحج البيت وصوم رمضان والجهاد والصدقة من العمل الصالح” (طب عن ابن عمر) .
ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বিষয়ের উপর প্রতিষ্টিত। এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর রাসূল। নামায কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, বায়তুল্লাহর হজ করা। রমজানের রোযা রাখা। আর জিহাদ এবং সাদকাহ হলো নেক আমলের মধ্যে থেকে।
29 – “بني الإسلام على خمس خصال: شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمدا عبده ورسوله، وإقام الصلاة، وإيتاء الزكاة، وحج البيت، وصوم رمضان. والجهاد والصدقة من العمل الصالح” (طب عن ابن عمر) .
ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের উপর প্রতিষ্টিত। এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর বান্দা এবং রাসূল। নামায কায়েম করা। যাকাত আদায় করা। বায়তুল্লাহর হজ করা। রমজানের রোযা রাখা। আর জিহাদ এবং সাদকাহ হলো নেক আমলের মধ্যে থেকে।
30 – “بني الإسلام على خصال: شهادة أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله، والإقرار بما جاء من عند الله، والجهاد ماض منذ بعث رسله إلى آخر عصابة تكون من المسلمين يقاتلون الدجال لا ينقصهم جور من جار ولا عدل من عدل، وأهل لا إله إلا الله فلا تكفروهم بذنب ولا تشهدوا عليهم بشرك، والقدر خيره وشره من الله تعالى” (ابن النجار ابن عمر) .
ইসলামের ভিত্তি এই কয়টি বৈশিষ্ট্যের উপর প্রতিষ্টিত। এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর রাসূল। আর এই স্বীকারোক্তি প্রদান করা যে- যা কিছু তিনি নিয়ে এসেছেন তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর যখন থেকে আল্লাহ তাআলা রাসূল প্রেরণ করেছেন তখন থেকে জিহাদ জারি রয়েছে এবং মুসলমানদের সর্বশেষ জামাআত (পর্যন্ত তা জারি থাকবে আর) তারাও দাজ্জালের সাথে যুদ্ধ করবে। কোন যালিমের যুলুম এবং কোন ন্যায়বিচারকের ন্যায়বিচার তাদেরকে তাদের মাকসাদ থেকে হঠাতে পারবে না। তারা হবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর পরিবারভুক্ত। অতএব তাদের কোন গুনাহ ও ত্রুটির কারণে তাদেরকে কাফির সাব্যস্ত করো না আর না তাদের প্রতি শিরকের সাক্ষ্য প্রদান করো। আর (জেনে রাখ যে,) তাকদীরের ভাল মন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকে।
31 – “أتاني جبريل فقال يا محمد الإسلام عشرة أسهم وخاب من لاسهم له.
أولها شهادة أن لا إله إلا الله،
والثاني الصلاة وهي الطهرة،
والثالث الزكاة وهي الفطرة،
والرابع الصوم وهو الجنة،
والخامس الحج وهو الشريعة،
والسادس الجهاد وهو الغزوة،
والسابع الأمر بالمعروف وهو الوفاء،
والثامن من النهي عن المنكر وهو الحجة،
والتاسع الجماعة وهي الألفة،
والعاشر الطاعة وهي العصمة” (أبو نعيم محمد بن أحمد العجلي
আমার নিকট জিবরাইল (আ) আসলেন এবং বললেন- হে মুহাম্মদ! ইসলামের দশটি অংশ রয়েছে। আর বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হলো সেই ব্যক্তি যার নিকট কোন অংশই নাই।
প্রথম: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষ্য প্রদান করা।
দ্বিতীয়: নামায- আর তা হলো পবিত্রতা।
তৃতীয়: যাকাত- আর তা হলো ফিতরাত।
চতুর্থ: রোযা- আর তা হলো (জাহান্নাম থেকে বাঁচার) ঢাল ।
পঞ্চম: হজ- আর তা হলো শরীআত।
ষষ্ট: জিহাদ- আর তা হলো গযওয়া।
সপ্তম: নেককাজের আদেশ করা- আর তা হলো আনুগত্য।
অষ্টম: অসৎ কাজে নিষেধ করা- আর তা হলো প্রমাণ।
নবম: জামাআত (মুসলিমদের সংঘবদ্ধতা)- আর তা হলো মহব্বত ও সুসম্পর্ক।
দশম: আনুগত্য- আর তা হলো সুরক্ষা।
32 – ” الإسلام ثمانية أسهم: الإسلام سهم والصلاة سهم والزكاة سهم وحج البيت سهم والجهاد في سبيل الله سهم وصوم رمضان سهم والأمر بالمعروف سهم والنهي عن المنكر سهم. وقد خاب من لاسهم له” (ط ن عن حذيفة وحسن ع قط في الأفراد والرافعي عن علي) ضعف.
ইসলামের আটটি অংশ। ইসলাম একটি অংশ। নামায একটি অংশ। যাকাত একটি অংশ। বায়তুল্লাহর হজ করা একটি অংশ। জিহাদ একটি অংশ। রমজানের রোযা একটি অংশ। নেককাজের আদেশ প্রদান করা একটি অংশ। অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করা একটি অংশ। আর বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হলো সেই ব্যক্তি যার নিকট একটি অংশও নাই।
33 – “أربع فرضهن الله عز وجل في الإسلام، من جاء بثلاث لم يغنين عنه شيئا حتى يأتي بهن جميعا: الصلاة والزكاة وصيام رمضان وحج البيت” (حم طب عن عمارة بن حزم وحسن، حم والبغوي عن زياد بن نعيم) .
আল্লাহ তাআলা চারটি জিনিস ইসলামে ফরয করেছেন। যদি কেউ তিনটিও পালন করে (আর একটি পালন না করে) তথাপি তার দ্বারা তার কোন ফায়দা হবে না- যে পর্যন্ত সে সব কয়টির আমল না করে। (তা হলো) নামায, যাকাত, রমজানের রোযা এবং বায়তুল্লাহর হজ করা।
34 – “إن للإسلام صنوا كمنار الطريق فمن ذلك أن يعبد الله ولا يشرك به شيئا، و؟؟ أقام الصلاة، وإيتاء الزكاة، ويحج البيت، ويصوم رمضان، والأمر بالمعروف، والنهي عن المنكر، والتسليم على بني آدم فإن ردوا عليك ردت عليك وعليهم الملائكة وإن لم يردوا عليك ردت عليك الملائكة ولعنتهم أوسكتت عنهم، وتسليمك على أهل بيتك إذا دخلت، ومن انتقص منهن شيئا فهو سهم من سهام الإسلام ترك، ومن تركهن كلهن فقد ترك الإسلام” (ابن السني في عمل اليوم والليلة) (طب عن أبي هريرة) .
ইসলোমের দৃষ্টান্ত হলো পথের দৃষ্টান্তের মত (যেমন তার অনেক বাঁক থাকে তেমনি) এর মধ্যে আছে- আল্লাহর ইবাদত করা। তার সাথে কোন কিছু শরীক না করা। নামায কায়েম করা। যাকাত আদায় করা। বায়তুল্লাহর হজ করা। রমজানের রোযা রাখা। সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করা। মানুষকে সালাম করা। যদি সে সালামের জবাব প্রদান করে তবে ফেরেশতা তোমার প্রতি ও তার প্রতি রহমত প্রেরণ করবে। অর যদি সে উত্তর না দেয় তবে ফেরেশতা তোমার প্রতি রহমত প্রেরণ করবে আর তার প্রতি লা’নত, অথবা তার ব্যাপারে নীরব থাকবে। আর যখন ঘরে প্রবেশ করবে তখন ঘরের লোকদেরকেও সালাম প্রদান করবে। এসবের মধ্য থেকে যার একটি অংশ কম হবে তবে নিশ্চিত, ইসলামের অংশের মধ্য থেকে তার একটি অংশ কমে গেল। আর যে সব ছেড়ে দিল, সে নিঃসন্দেহে ইসলামকে ছেড়ে দিল।
35 – “لم آتكم إلا بخير، آتيتكم أن تعبدوا الله وحده لاشريك له وأن تدعوا اللات والعزى وأن تصلوا بالليل والنهار خمس صلوات وأن تصوموا من السنة شهرا وأن تحجوا البيت وأن تأخذوا من أموال أغنيائكم فتردوها على فقرائكم” (حم) عن رجل من بني عامر.
আমি তোমাদের নিকট কল্যাণ ব্যতীত আর কিছুই নিয়ে আসিনি। আমি তোমাদের নিকট এসেছি (এই বার্তা নিয়ে) যে, তোমরা একক ও অদ্বিতীয় আল্লাহর ইবাদত করবে। লাত ও উযযাকে (সব মূর্তিকে তথা আল্লাহ ব্যতীত সবকিছুকে যার উপাসনা করা হয়) পরিত্যাগ করবে। দিনে রাতে পাঁচবার নামায পড়বে। সাড়া বছরে এক মাস রোযা রাখবে। বায়তুল্লাহর হজ করবে। আর তোমাদের ধনীদের নিকট থেকে যাকাত ও সাদকা উসূল করে তোমাদের গরীব ও নিঃস্বদের মধ্যে তা দান করবে।
36 – “يا عدي بن حاتم أسلم تسلم قال وما الإسلام قال أشهد أن لا إله إلا الله وأني رسول الله وتؤمن بالأقدار كلها خيرها وشرها حلوها ومرها” (هـ) عن عدي بن حاتم.
হে আদি ইবনে হাতিম! ইসলাম গ্রহণ কর, শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করবে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলাম কি? নবী (সা) বললেন- এ কথার সাক্ষ্য প্রদান কর যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং আমি (মুহাম্মদ) আল্লাহর রাসূল। আর তাকদীরের প্রতি ইমান আনয়ন কর- তা ভাল হোক অথবা মন্দ, মিষ্ট হোক অথবা তিক্ত।
37 – “يا عدي بن حاتم أسلم تسلم قال مالإسلام قال تؤمن بالله وملائكته وكتبه ورسله وتؤمن بالقدر خيره وشره حلوه ومره يا عدي بن حاتم لا تقوم الساعة حتى تفتح خزائن كسرى وقيصر يا عدي بن حاتم تأتي الظعينة من الحيرة حتى تطوف بهذه الكعبة بغير خفير، يا عدي بن حاتم لا تقوم الساعة حتى يحمل الرجل جراب المال فيطوف به فلا يجد أحد يقبله فيضرب به الأرض فيقول ليتك لم تكن ليتك كنت ترابا ” (طب) الخطيب وابن عساكر عن عدي ابن حاتم.
হে আদি ইবনে হাতিম! ইসলাম গ্রহণ কর, শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করবে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলাম কি? নবী (সা) বললেন, তুমি আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি আর তার রাসূলগণের প্রতি ইমান আনয়ন কর। আর ইমান আনয়ন কর তাকদীরের প্রতি- তা ভাল হোক অথবা মন্দ, মিষ্ট হোক অথবা তিক্ত। হে আদি ইবনে হাতিম! কিয়ামত কায়েম হবে না- যে পর্যন্ত না কিসরা ও কায়সার তথা পারস্য ও রোম সম্রাটের ধনাগার বিজিত না হবে। হে আদি ইবনে হাতিম! (কিয়ামত কায়েম হবে না- যে পর্যন্ত না) এমন এক সময় আসবে, যখন একজন নারী সুদূর হীরা থেকে একাকী সফর করে এসে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করবে। হে আদি ইবনে হাতিম! কিয়ামত কায়েম হবে না- যে পর্যন্ত না (সম্পদের এমন প্রাচূর্য হবে যে) একজন লোক মাল ভর্তি থলে নিয়ে এসে কা’বা তাওয়াফ করবে আর তার মাল নেওয়ার মত কোন লোক পাওয়া যাবে না। শেষ পর্যন্ত সেই ব্যক্তি সেই মালের থলি যমীনে মারতে মারতে বলবে- যদি তুই না থাকতি, যদি তুই মাটি হতি।
38 – “الإسلام أن تشهد أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله وتقيم الصلاة وتؤتي الزكاة وتصوم رمضان وتحج البيت إن استطعت إليه سبيلا” (حم د ت ن هـ عن عمر) .
ইসলাম হলো এই যে, তুমি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর’ সাক্ষ্য প্রদান করবে। নামায কায়েম করবে। যাকাত প্রদান করবে। রমজানের রোযা রাখবে। বায়তুল্লাহর হজ পালন করবে- যদি সে পর্যন্ত যাওয়ার (দৈহিক ও আর্থিক) সামর্থ্য থাকে।
39 – “الإسلام أن تسلم وجهك لله عز وجل وأن تشهد أن لا إله إلا الله وحده لاشريك له وأن محمدا عبده ورسوله وتقيم الصلاة وتؤتي الزكاة وتصوم شهر رمضان وتحج البيت إن استطعت إليه سبيلا فإذا فعلت ذلك فقد أسلمت” (حم ن عن ابن عباس) (حم عن أبي عامر وأبي مالك) (ن عن أنس) (ابن عساكر عن عبد الرحمن بن غنم) .
ইসলাম হলো এই যে, তুমি নিজেকে আল্লাহর সোপর্দ করবে। আল্লাহ ব্যতীতত কোন মাবুদ নাই এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করবে। তিনি একক তার কোন শরীক নাই আর মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর বান্দা এবং রাসূল। আর নামায কায়েম করবে। যাকাত প্রদান করবে। রমজান মাসের রোযা রাখবে। বায়তুল্লাহর হজ পালন করবে- যদি সে পর্যন্ত যাওয়ার (দৈহিক ও আর্থিক) সামর্থ্য থাকে। যদি তুমি এই কাজগুলো কর তবে তুমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলে।
40 – ” الإسلام أن تشهد أن لا إله إلا الله وأن محمدا رسول الله وتقيم الصلاة وتؤتي الزكاة وتحج البيت وتعتمر وتغتسل عن الجنابة وأن تتم الوضوء وتصوم رمضان” (حب عن عمر)
ইসলাম হলো এই যে, তুমি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর’ সাক্ষ্য প্রদান করবে। নামায কায়েম করবে। যাকাত প্রদান করবে। বায়তুল্লাহর হজ ও উমরা পালন করবে। জানাবাত বা অপবিত্রতা থেকে গোসল করবে। ওযু পূর্ণাঙ্গভাবে করবে। আর রমজান মাসের রোযা রাখবে।
41 – “الإسلام شهادة أن لا إله إلا الله وأني رسول الله وأن تؤمن بالأقدار خيرها وشرها” (ن) عن عدي بن حاتم
ইসলাম হলো সাক্ষ্য প্রদান করা এ কথার যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই এবং আমি (মুহাম্মদ) আল্লাহর রাসূল। আর এটাও যে, তুমি তাকদীরের ভাল-মন্দ সবকিছুর প্রতি ইমান আনবে।
42 – “الإسلام أن تعبد الله ولا تشرك به شيئا وتقيم الصلاة وتؤتي الزكاة وتصوم وتحج، والأمر بالمعروف والنهي عن المنكر”وتسليمك على أهل بيتك فمن انتقص شيئا منهن فهو سهم من الإسلام يدعه ومن تركهن فقد ولى الإسلام ظهره” (هـ ك عن أبي هريرة) .
ইসলাম হলো এই যে, তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে আর তার সাথে কোন কিছু শরীক করবে না। নামায কায়েম করবে। যাকাত প্রদান করবে। (রমজানের) রোযা রাখবে। হজ পালন করবে। সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজে নিষেধ করবে। আর নিজের ঘরের লোকদেরকে সালাম করবে। এসবের মধ্য থেকে যে একটি অংশ ছেড়ে দিল সে ইসলামের একটি অংশ ছেড়ে দিল। আর যে সব ছেড়ে দিল সে ইসলামকে পিছনে ফেলে দিল।
43 – “الإسلام عشرة أسهم وقد خاب من لاسهم له شهادة أن لا إله إلا الله وهي الملة والثانية الصلاة وهي الفطرة والثالثة الزكاة وهي الطهرة والرابعة الصوم وهي الجنة والخامسة الحج وهي الشريعة والسادسة الجهاد وهو الغزوة والسابعة الأمر بالمعروف وهو الوفاء والثامنة النهي عن المنكر وهي الحجة والتاسعة الجماعة وهي الألفة والعاشرة الطاعة وهي العصمة” (طب طس عن ابن عباس) وفيه حامد بن آدم المروزي يضع الحديث.
ইসলামের দশটি অংশ রয়েছে। আর বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হলো সেই ব্যক্তি যার নিকট কোন অংশই নাই।
প্রথম: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর সাক্ষ্য প্রদান করা। আর তা হলো মিল্লাত বা দীন।
দ্বিতীয়: নামায- আর তা হলো ফিতরাত।
তৃতীয়: যাকাত- আর তা হলো পরিশুদ্ধি।
চতুর্থ: রোযা- আর তা হলো (জাহান্নাম থেকে বাঁচার) ঢাল।
পঞ্চম: হজ- আর তা হলো শরীআত।
ষষ্ট: জিহাদ- আর তা হলো গযওয়া।
সপ্তম: নেককাজের আদেশ করা- আর তা হলো আনুগত্য।
অষ্টম: অসৎ কাজে নিষেধ করা- আর তা হলো প্রমাণ।
নবম: জামাআত (মুসলিমদের সংঘবদ্ধতা)- আর তা হলো মহব্বত ও সুসম্পর্ক।
দশম: আনুগত্য- আর তা হলো সুরক্ষা।
এই রিওয়ায়ায়াতের একজন রাবী হামিদ বিন আদম আল মারূযী يضع الحديث
44 – ” الإسلام علانية والإيمان في القلب التقوى في القلب وأشار بيده إلى صدره” (حم ن ع عن أنس) وصحح.
ইসলাম প্রকাশ্য বিষয় এবং ইমান অন্তরের বিষয়। আর তাকওয়া হলো অন্তরে- অন্তরের দিকে ইশারা করে।
45 – “ألا لعلكم لا تروني بعد عامكم هذا. اعبدوا ربكم وصلوا خمسكم وصوموا شهركم وحجوا بيتكم وأدوا زكاة أموالكم طيبة أنفسكم وأطيعوا إذا أمرتكم تدخلوا جنة ربكم” (محمد بن نصر عن أبي أمامة)
হয়তোবা এ বছরের পর তোমরা আমাকে আর দেখবে না। (অতএব আমি তোমাদেরকে ওসীয়ত করছি) তোমরা তোমাদের রবের ইবাদত করবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করবে। রমজান মাসের রোযা রাখবে। বায়তুল্লাহর হজ করবে। খুশিমনে নিজের সম্পদের যাকাত আদায় করতে থাকবে। আর যখন তোমাদেরকে কোন কিছুর নির্দেশ প্রদান করি তা মানবে। এতে তোমরা তোমার প্রতিপালকের জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।
46 – “ألا تستمعون. اعبدوا ربكم وصلوا خمسكم وصوموا شهركم وأدوا زكاة أموالكم وأطيعوا إذا أمرتكم تدخلوا جنة ربكم” (حم وابن منيع حب قط ك ص عن أبي أمامة) .
তোমরা কি শোন না (আমি কি বলি)? তোমরা তোমাদের রবের ইবাদত করবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করবে। রমজান মাসের রোযা রাখবে। নিজের সম্পদের যাকাত আদায় করবে। যখন আমি তোমাদেরকে কোন কিছুর নির্দেশ প্রদান করি তা মেনে চলবে। এতে তোমরা তোমার প্রতিপালকের জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।
47 – “أن تعبد الله ولا تشرك به شيئا وتقيم الصلاة وتؤتي الزكاة وكل مسلم من مسلم حرام، ياحكيم بن معاوية هذا دينك أينما تكن يكفيك” (ابن أبي عاصم والبغوي طب ك عن معاوية بن حكيم عن معاوية النميري عن أبيه) أنه قال يا رسول الله بما أرسلك ربك قال فذكره.
তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে আর তার সাথে কোন কিছু শরীক করবে না। নামায কায়েম করবে। যাকাত আদায় করবে। আর জেনে রাখ! প্রত্যেক মুসলমানের জান ও মাল অপর মুসলমানের জন্য হারাম। হে হাকীম ইবনে মুয়াবিয়া (এগুলো স্মরণ রেখ!) এটা তোমার দীন। তুমি যেখানেই যাও তা (মেনে চলা) তোমার জন্য যথেষ্ট হবে।
এই রিওয়ায়াতের পূর্ববর্তী সূত্র হলো যে, হাকীম ইবনে মুয়াবিয়া (রা) রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, আপনার প্রতিপালক আপনাকে কোন জিনিসের সাথে প্রেরণ করেছেন? তখন তিনি উক্ত হাদীস ইরশাদ করেন।
48 – ” أن تقول أسلمت وجهي لله وتخليت وتقيم الصلاة وتؤتي الزكاة. كل مسلم على مسلم محرم أخوان نصير أن لا يقبل الله من مشرك بعد ما أسلم عملا أو يفارق المشركين إلى المسلمين” (ن ك عن بهز بن حكيم عن أبيه عن جده) أنه قال ما آيات الإسلام قال فذكره.
বল আমি নিজেকে আল্লাহর উপর সোপর্দ করলাম এবং তার জন্য আত্ম-নিবেদিত হলাম। আর নামায কায়েম কর। যাকাত আদায় কর। জেনে রাখ! প্রত্যেক মুসলমান (তার জান ও মাল) অপর মুসলামানের জন্য হারাম। সবাই ভাই ভাই এবং একে অপরের সাহায্যকারী। আর জেনে রাখ! কোন মুশরিক মুসলমান হওয়ার পর তার আমল আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করেন না- যে পর্যন্ত না সে মুশরিকদের থেকে পৃথক হয়ে মুসলমানদের সাথে না মিশে।
এই রিওয়ায়াতের পূর্ববর্তী সূত্র হলো যে, ঐ সাহাবী রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট ইসলামের আলামত এর বিষয় জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তখন তিনি উক্ত হাদীস ইরশাদ করেন।
49 – “أن تشهد أن لا إله إلا الله وحده لاشريك له وأن محمدا عبده ورسوله وأن يكون الله ورسوله أحب إليك مما سواهما وأن تحترق في النار أحب إليك من أن تشرك بالله وأن تحب ذا نسب لا تحبه إلا لله فإذا كنت كذلك فقد دخل حب الإيمان في قلبك كما دخل حب الماء للظمآن في اليوم القائظ” (حم عن أبي رزين العقيلي) أنه قال يا رسول الله ما الإيمان؟ قال فذكره وحسن.
তুমি একথার সাক্ষ্য প্রদান কর যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন মাবুদ নাই। তিনি একক তার কোন শরীক নাই। আর মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর বান্দা এবং তার রাসূল। আর তোমার নিকট যেন আল্লাহ এবং তার রাসূল অন্য সবকিছু থেকে বেশী প্রিয় হয়। আর আল্লাহর সাথে শরীক করার চেয়ে যেন আগুনে জলা তোমার নিকট বেশী পছন্দনীয় হয়। আর কাউকে মহব্বত করলে যদিও সে আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত হয়- আল্লাহর জন্যই মহব্বত কর। যখন তুমি এই অবস্থায় পৌছে যাবে তখন তোমার অন্তরে ইমান এমনভাবে প্রবেশ করবে (প্রিয় হয়ে যাবে), যেভাবে উত্তপ্ত দিনে পিপাসার্তের নিকট পানি প্রিয় হয়ে যায়।
এই রিওয়ায়াতের পূর্ববর্তী সূত্র হলো যে, ঐ সাহাবী রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট জিজ্ঞাসা করেছিলেন ইমান কি? তখন তিনি (সা) উক্ত হাদীস ইরশাদ করেন। আর তিনি কত সুন্দরই না বলেছেন।
50- “أن تعبد الله ولا تشرك به شيئا وتقيم الصلاة وتؤتي الزكاة وتصوم رمضان وتحج وتعتمر وتسمع وتطيع وعليك بالعلانية وإياك والسر” (حب عن ابن عمر) أن رجلا قال يا رسول الله أوصني قال فذكره.
তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে আর তার সাথে কোন কিছু শরীক করবে না। নামায কায়েম করবে। যাকাত আদায় করবে। রমজানের রোযা রাখবে। হজ ও উমরা করবে। আমীরের কথা শুনবে এবং তার আনুগত্য করবে। তোমরা প্রকাশ্য বিধানের জন্য আদিষ্ট। অতএব কারো গোপনীয় বিষয়ের অনুসন্ধান করবে না।
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলেছিলেন, আমাকে উপদেশ দিন। তখন তিনি (সা) এই হাদীস ইরশাদ করেন।
51 – “هل تدرون من هذا، هذا جبريل أتاكم يعلمكم دينكم خذوا عنه والذي نفسي بيده ماشبه علي منذ أتاني قبل مرتي هذه وما عرفته حتى ولى” (حب عن ابن عمر) .
তোমরা কি জান ইনি কে? ইনি জিবরাইল (আ)। তোমাদেরকে তোমাদের দীন শিখাতে এসেছেন। তার কথাগুলো সংরক্ষণ করে রাখ। কসম সেই সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ! সে পূর্বে যতবার এসেছে তাকে চিনতে কোন অসুবিধা হয়নি এইবার ছাড়া। আর এইবার তাকে আমি তখন চিনেছি যখন সে প্রস্থান করতে উদ্যত হলেন।
পোষ্টটি ভালো লেগে থাকলে আপনার মূল্যবান মতামত জানান প্লিজ!