❏ হাদিস ১ :
‘গাদীরে খোম’ নামক স্থানে ব্যক্ত করেছিলেন:
«وَأَهْلُ بَيْتِي أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي، أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي، أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي»
“আমার আহল, আমার আহলের ব্যাপারে তোমাদেরকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। আমার আহলের ব্যাপারে তোমাদেরকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। আমার আহলের ব্যাপারে তোমাদেরকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।” [সূত্রঃ সহীহ মুসলিম, হা/ ২৪০৮]।
❏ হাদিস ২ :
পথে রাবেগের নিকটবর্তী খোম কুয়ার নিকট পোঁছালে বুরাইদা আসলামী (رضي الله عنه) রাসুল (ﷺ)-এর নিকটে আলী (رضي الله عنه) এর ব্যাপারে গনিমত বণ্টন সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু কথা বলেন। এর প্রেক্ষিতে রাসুল (ﷺ) সাহাবীদের সামনে কিছু বক্তব্য পেশ করেন। এই বক্তব্যের মধ্যকার কিছু অংশ ছিল –
قَامَ رَسُولُ اللهِ صَلَّىاللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا فِينَا خَطِيبًا، بِمَاءٍ يُدْعَى خُمًّا بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، وَوَعَظَ وَذَكَّرَ، ثُمَّ قَالَ
: ” أَمَّا بَعْدُ، أَلَا أَيُّهَا النَّاسُ فَإِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ يُوشِكُ أَنْ يَأْتِيَ رَسُولُ رَبِّي فَأُجِيبَ، وَأَنَا تَارِكٌ فِيكُمْ ثَقَلَيْنِ: أَوَّلُهُمَا كِتَابُ اللهِ فِيهِ الْهُدَى وَالنُّورُ فَخُذُوا بِكِتَابِ اللهِ، وَاسْتَمْسِكُوا بِهِ ” فَحَثَّعَلَى كِتَابِ اللهِ وَرَغَّبَ فِيهِ، ثُمَّ قَالَ: «وَأَهْلُ بَيْتِي أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي، أُذَكِّرُكُمُاللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي، أُذَكِّرُكُمُ اللهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي»
অর্থঃ রাসুলুল্লাহ(ﷺ) একদিন মক্কা ও মদীনার মাঝামাঝি ‘খুম’ নামক স্থানে দাঁড়িয়ে আমাদের সামনে বক্তৃতা দিলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও সানা বর্ণনা শেষে ওয়ায-নাসিহত করলেন। অতঃপর বললেনঃ শোনো হে লোক সকল! আমি তো কেবল একজন মানুষ, অতি সত্ত্বরই আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত দূত (মৃত্যুর ফেরেশতা) আসবেন, আর আমিও তাঁর আহ্বানে সাড়া দেবো। আমি তোমাদের নিকট ২টি ভারী জিনিস রেখে যাচ্ছি। এর প্রথমটি হলো আল্লাহর কিতাব (কুরআন)। এতে পথনির্দেশ এবং আলোকবর্তিকা আছে। অতএব তোমরা আল্লাহর কিতাবকে অনুসরণ করো, একে শক্ত করে আঁকড়ে রাখো। তারপর তিনি কুরআনের প্রতি উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা দিলেন। এরপর বলেন, আর [অন্যটি হলো] আমার আহলে বাইত[(আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (عليه السلام)]। আর আমি আমার আহলে বাইতের বিষয়ে তোমাদের আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। আমার আহলে বাইতের ব্যাপারে তোমাদের আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আমার আহলে বাইতের বিষয়ে তোমাদের আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। …”
[সূত্রঃ সহীহ মুসলিম, হা/ ২৪০৮]।
❏ হাদিস ৩ :
حدثنا نصر بن عبد الرحمن الكوفي حدثنا زيد بن الحسن هو الأنماطي عن جعفر بن محمد عن أبيه عن جابر بن عبد الله قال رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم في حجته يوم عرفة وهو على ناقته القصواء يخطب فسمعته يقول يا أيها الناس إني قد تركت فيكم ما إن أخذتم به لن تضلوا كتاب الله وعترتي أهل بيتي……..
قال وهذا حديث حسن
হযরত যাবের ইবনে আব্দুল্লাহ আনসারী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন,
“হে মানব সম্প্রদায়! আমি তোমাদের মধ্যে দু‘টি ভারি বস্তু রেখে যাচ্ছি, যদি এ দু‘টিকে আঁকড়ে ধরে থাক (অনুসরণ কর) তাহলে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না।” আর যদি একটিকে ছাড় তাহলে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। তার প্রথমটি হচ্ছে “আল্লাহর কিতাব (কোরআন) দ্বিতীয়টি হচ্ছে আমার ইতরাত, আহলে বাইত” [(আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (عليه السلام)] এ দু‘টি কখনই পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন হবে না, যতক্ষণ না হাউজে কাউসারে আমার সাথে মিলিত হবে। তাদের সাথে তোমরা কিরূপ আচরণ কর, এটা আমি দেখবো।
[সূত্রঃ- সহীহ্ মুসলিম, খঃ-৫, হাঃ-৬০০৭, ৬০১০, (ই, ফাঃ); সহীহ মুসলিম, খঃ-৫, পৃঃ- ৩৭৪-৩৭৫, হাঃ-৬১১৯-৬১২২, (আহলে হাদীস লাইব্রেরী); সহীহ্ তিরমীজি, খঃ-৬, হাঃ-৩৭৮৬- ৩৭৮৮, (ই,ফাঃ); মেশকাত, খঃ-১১, হাঃ-৫৮৯২-৫৮৯৩, (এমদাদীয়া); তাফসীরে মাজহারী, খঃ-২, পৃঃ-১৮১, ৩৯৩, আল্লামা সানাউল্লাহ পানিপথি (ইফাঃ); তাফসীরে হাক্কানী (মাওলানা শামসুল হক ফরীদপূরি) পৃঃ-১২-১৩ (হামিদীয়া); তাফসীরে নূরুল কোরআন, খঃ-৪, পৃঃ-৩৩, খঃ-২২, পৃঃ-১৭ (মাওলানা আমিনুল ইসলাম); মাদারেজুন নাবুয়াত, খঃ-৩, পৃঃ-১১৫, (শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দেস দেহলভী); ইযাযাতুল খিফা (শাহ ওয়ালিউল্লাহ), খঃ-১, পৃঃ-৫৬৬; সিলসিলাত আল আহাদিস আস সাহীহাহ্, নাসিরউদ্দিন আলবানী, কুয়েত আদদ্বার আস সালাফীয়া, খঃ- ৪, পৃঃ-৩৫৫-৩৫৮, হাঃ-১৭৬১, (আরবী); (নাসিরউদ্দিন আলবানীর মত এই হাদীসটি সহীহ্)]।
আহলে বাইত-এর মুয়াদ্দাত ও অনুসরণ ফরজ।
পবিত্র কোরআনে, মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) -এর আহলে বাইত-এর মুয়াদ্দাত ও অনুসরণ ফরজ করা হয়েছে।
আরো এরশাদ হচ্ছে: “বলুন, যে পারিশ্রমিকেই আমি তোমাদের কাছ চেয়ে থাকি না কেন, তা তো তোমাদেরই জন্য।” [সূরা-সাবা, আয়াত ৪৭]।
“বলুন, আমি আমার রিসালাতের পারিশ্রমিক তোমাদের কাছে কিছুই চাই না, শুধু আমার কুরবা (আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন)-এর মুয়াদ্দাত (আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসা) ব্যতিত।” [সূরা-শুরা, আয়াত-২৩]।
❏ হাদিস ৪ :
হযরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (رضي الله عنه) বর্ণনা করেছেন যে, যখন এই আয়াত নাযিল হলো তখন সাহাবাগণ জিজ্ঞেস করলেন, “ইয়া রাসূলুল্লাহ (صلى الله عليه و آله و سلم) কাঁরা আপনার নিকট আত্মীয়? যাদের মুয়াদ্দাত (আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসা) পবিত্র কোরআনে উম্মতের উপর ফরজ করা হয়েছে। উত্তরে নবী (ﷺ) বললেন-আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন এর মুয়াদ্দাত (আনুগত্য)।”
[সূত্রঃ কোরআন শরীফ (শুরা,২৩) (আশরাফ আলী থানভী), পৃঃ-৬৯২;তাফসীরে মাজহারী, খঃ-১১, পৃঃ-৬৩ (ই,ফাঃ); তাফসীরে নুরুল কোরআন (মাওলানা আমিনুল ইসলাম),খঃ-২৫, পৃঃ-৬৭; মাদারেজুন নাবুয়াত, খঃ-৩, পৃঃ-১১৭, শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দেস দেহলভী তাফসীরে দূররে মানসুর, খঃ-৬, পৃঃ-৭ (মিশর); তাফসীরে যামাখশারী, খঃ-২, পৃঃ-৩৯৯, (মিশর); তাফসীরে তাবারী, খঃ-২৫, পৃঃ-২৫ (মিশর); তাফসীরে কাশশাফ, খঃ-৩, পৃঃ-৪০২; খঃ-৪, পৃঃ-২২০ (মিশর); তাফসীরে কাবীর, খঃ-২৭, পৃঃ-১৬৬ (মিশর); তাফসীরে বায়যাভী, খঃ-৪, পৃঃ-১২৩ (মিশর); তাফসীরে ইবনে কাসির, খঃ-৪, পৃঃ-১১২ (মিশর); তাফসীরে কুরতুবি, খঃ-১৬, পৃঃ-২২ (মিশর); তাফসীরে নাসাফী, খঃ-৪, পৃঃ-১০৫ (মিশর); তাফসীরে আবু সাউদ, খঃ-১, পৃঃ-৬৬৫; তাফসীরে জামে উল বায়ান, (তাবারী), খঃ-২৫, পৃঃ-৩৩; তাফসীরে আল আকাম, খঃ-২, পৃঃ-১২১; তাফসীরে বাহরুল মুহিয়াত (ইবনে হাইয়্যান), খঃ-৯, পৃঃ- ৪৭৬; তাফসীরে বিহার আল মাদিদ (ইবনে আজি), খঃ-৫, পৃঃ-৪৩১; তাফসীরে আবু সাউদ, খঃ-৬, পৃঃ-৮০; তাফসীরে কাবীর, খঃ-১৩, পৃঃ-৪৩২; তাফসীরে বাইদাবী, খঃ-৫, পৃঃ-১৫৩; তাফসীরে আল নাসাফী, খঃ-৩, পৃঃ-২৮০; তাফসীরে আল নিশাবুরি, খঃ-৬,পৃঃ-৪৬৭; ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-১৭৩, (উর্দ্দু); আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-১০২, ৫৮৭, (উর্দ্দু)]।
❏ হাদিস ৫ :
হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) ও সে কথাটি বলেছেন যে, “মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) -এর সন্তুষ্টি তাঁর আহলে বাইতের ভালবাসার মধ্যে নিহিত।”
[সূত্রঃ সহীহ্ বোখারী, খঃ-৬, হাঃ-৩৪৪৭, ৩৪৭৯, (ই. ফাঃ); তাফসীরে ইবনে কাসির, খঃ-১৬, পৃঃ-৫২৬; (হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, আহলে হাদীস)]।
“আল্লামা যামাখশারী ও আল্লামা ফাখরে রাজী প্রখ্যাত দুজন তাফসীরকারক” ও বিজ্ঞ আলেম, তারা তাদের সুবিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থদ্বয় “আল কাশশাফ ও আল কাবীর” তাফসিরদ্বয়ে এভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন যখন উক্ত আয়াত নাযিল হলো (সূরা-শুরা-আয়াত-২৩) তখন রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেন:-
(১) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, সে শহিদী মর্যাদা পায়।
(২) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, সে নাজাত প্রাপ্ত হয় ইহজগৎ ত্যাগ করে ।
(৩) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, সে তওবাকারী হিসাবে ইহজগৎ ত্যাগ করে।
(৪) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, সে পূর্ণ ঈমানের সঙ্গে ইহজগৎ ত্যাগ করে।
(৫) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, তাকে মালোকুল মউত, মুনকীর ও নকীর ফেরেশতারা সুসংবাদ দেয়।
(৬) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, তাকে এমন ভাবে বেহেশতে নিয়ে যাওয়া হবে যেমন বিবাহের দিন কন্যা তার শ্বশুরালয়ে যায়।
(৭) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, তার কবরে জান্নাত মুখী দু‘টি দরজা খুলে দেয়া হবে।
(৮) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, আল্লাহ তার কবরকে রহমতের ফেরেশতাদের জিয়ারতের স্থানের মর্যাদা দেন।
(৯) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের ভালবাসা নিয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করে, সে নবীর সুন্নত ও খাঁটি-মুসলমানদের দলভুক্ত হয়ে ইহজগৎ ত্যাগ করলো।
(*) সাবধান যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের শত্রুতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, কিয়ামতের দিনে তার কপালে লেখা থাকবে সে আল্লাহ পাকের রহমত হতে বঞ্চিত।
(*) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের শত্রুতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, সে কাফের হয়ে মারা যায়।
(*) যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের শত্রুতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, সে বেহেশতের সুগন্ধও পাবে না।
সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (صلى الله عليه و آله و سلم) আপনার “আ’ল” আহলে বাইত, কারা? “নবীজি (صلى الله عليه و آله و سلم) বললেন, আলী, ফাতেমা, হাসান, ও হোসেইন, তিনি আরো বলেন, আল্লাহর কসম যার হস্তে আমার জীবন, যে ব্যক্তি আমার আহলে বাইতকে শত্রু মনে করবে, সে জাহান্নামী।”
[সূত্রঃ তাফসীরে কাবির, খঃ-২৭, পৃঃ-১৬৫, (মিশর); তাফসীরে আল কাশশাফ ওয়াল বায়ান, খঃ-৩, পৃঃ-৬৭, (মিশর); তাফসীরে কুরতুবি, খঃ-১৬, পৃঃ-২২, (মিশর); এহইয়াউল মাইয়াত, পৃঃ-৬; আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৪১৮; সাওয়ায়েক মোহরিরকা, পৃঃ-১০৪; ইয়া নাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৫৫, ৫৯৯]।
আহলে বাইয়াত বিদ্বেষীরা যখন আহলে বাইয়াতের প্রেম থাকলেই রাফেজী বলে অপপ্রচার করতে লাগল, তখন ইমাম শাফেয়ী বলেন, “যদি কেবল মুহাম্মদ (صلى الله عليه و آله و سلم)-এর আহলে বাইতের প্রতি ভালবাসা রাখলেই যদি মানুষ রাফেযী হয়ে যায়, তবে বিশ্ব জগতের সমস্ত জ্বীন ও মানব সাক্ষী থাকুক, আমিও রাফেযী।”
[সূত্রঃ কোরআনুল করিম-(মাওলানা মহিউদ্দিন খান), পৃঃ-১২১৫; শেইখ সুলাইমান কান্দুযী-ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৫৭৭; ওবাইদুল্লাহ ওমরিতসারী-আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৮৮৬]।
আহলে সুন্নাতের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা জালাল উদ্দিন সূয়ুতী বর্ণনা করেন যে, পবিত্র কোরআন ও নবী (صلى الله عليه و آله و سلم)-এর হাদীস হতে এটা প্রমাণিত হয় যে, আহলে বাইত আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (عليه السلام)-এর মুয়াদ্দাত (আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসা) দ্বীনের ফরায়েজে গণ্য; সুতরাং ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) এটার সমর্থনে এরূপ সনদ দিয়েছেন যে, “ইয়া আহলে বাইত-এ রাসূল, আল্লাহ তাঁর নাজিল করা পবিত্র কোরআনে আপনাদের মুয়াদ্দাতকে ফরজ করেছেন, যারা নামাজে আপনাদের উপর দরুদ পড়বে না, তাদের নামাজই কবুল হবে না”।
[সূত্রঃ ইবনে হাজার মাক্কীর, সাওয়ায়েকুল মুহরেকা, পৃঃ ১০৩]।
❏ হাদিস ৬ :
রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন, সাবধান! “যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মদের শত্রুতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, কিয়ামতের দিন তার কপালে লেখা থাকবে, সে আল্লাহপাকের রহমত হতে বঞ্চিত। যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের শত্রুতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, সে কাফের হয়ে মারা যায়। যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মাদের শত্রুতা নিয়ে মৃত্যুবরণ করে, সে বেহেশতের সুগন্ধও পাবে না।”
[সূত্রঃ তাফসীরে আল কাশশাফ ওয়াল বায়ান, খঃ-৩, পৃঃ-৬৭,(মিশর);তাফসীরে কাবির, খঃ-২৭, পৃঃ-১৬৫, (মিশর); তাফসীরে কুরতুবি, খঃ-১৬, পৃঃ-২২, (মিশর); এহইয়াউল মাইয়াত, পৃঃ-৬; আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৪১৮; সাওয়ায়েক মোহরিকা, পৃঃ-১০৪; ইয়া-নাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৫৫, ৫৯৯]।
❏ হাদিস ৭ :
রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেন, “যে ব্যক্তি এজন্য আনন্দিত যে,সে চায় আমার মত জীবন যাপন করতে, আমার মত মৃত্যুবরণ করতে ও আমার প্রতিপালকের চিরস্থায়ী বেহেশতে বাস করতে সে যেন আমার পর, আমার আহলে বাইতকে অনুসরণ করে। কারণ তাঁরা আমার সর্বাধিক আপন এবং তাঁরা আমার অস্তিত্ব হতে অস্তিত্ব লাভ করেছে। আমার জ্ঞান ও প্রজ্ঞা থেকেই তারা জ্ঞান ও প্রজ্ঞা লাভ করেছে। ধ্বংস আমার সেই উম্মতের জন্য যারা আমার আহলে বাইতের শ্রষ্ঠত্বকে মিথ্যা মনে করে এবং আমার ও তাদের (আহলে বাইত (عليه السلام)-এর) মধ্যেকার সম্পর্ক ছিন্ন করে। আল্লাহ আমার শাফায়াতকে তাদের জন্য হারাম করেছেন”।
[সূত্রঃ মুস্তাদরাকে হাকেম, খঃ -৩, পৃঃ-১২৮; মুসনাদে আহম্মদ, খঃ -৫, পৃঃ-৯৪; কানজুল উম্মাল, খঃ-৬, পৃঃ-২১৭, হাঃ-৩৭১৯; হুলিয়াতুল আউলিয়া,পৃঃ-৪৪৯]।
❏ হাদিস ৮ :
হযরত আবদুল্লাহ্ ইব্নে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) ইরশাদ করেন, “যদি কোন ব্যক্তি পবিত্র কা’বার পাশে রুকন ইয়ামানি ও মাকাম ইব্রাহিমের মধ্যবর্তী স্থানে দন্ডায়মান হয়ে নামাজ আদায় করে এবং রোযাও রাখে, অতঃপর এমতাবস্থায় আহলে বাইতের সাথে বিদ্বেষ রেখে মৃত্যুবরণ করে, তাহলে সে জাহান্নামে যাবে”।
[সূত্রঃ তাবরানী, আল মু’জাম আল আওসাত,খঃ- ৪, পৃঃ-২১২, হাঃ-৪০০২; হায়সামী, মাজমাউজ যাওয়ায়েদ, খঃ-৯, পৃঃ-১৭২; জুরজানী, তারিখ জুরজান, পৃঃ-৩৬৯; হাকেম আল মুস্তাদরাক, খঃ-৩, পৃঃ-১৬২, হাঃ-৪৭১৭; হায়সামী সাওয়াইক আল-মুহরিকা, পৃঃ-৯০; আল্লামা সূয়ুতী, এহইয়াউল মাইয়্যাত, পৃঃ-২০; ইবনে হিব্বান, আস সহীহ, খঃ-১৫, পৃঃ-৪৩৫, হাঃ-৬৯৭৮; যাহাবী সি’আরু আলামিন নুবালা, খঃ-২, পৃঃ-১২৩; (হাকেমের মত এই হাদীসটি ইমাম মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ্); মুহিবের তাবারী, যাখায়েরুল উকবা, পৃঃ-৫১; ফাসবী, আল ‘মা’রিফাতু ওয়াত তারিখ, খঃ- ১, পৃঃ-৫০৫; আল্লামা আলী হামদানি শাফায়ী, মুয়াদ্দাতুল কুরবা, পৃঃ-১০৯; ওবাইদুল্লাহ অমৃতসারি-আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৫৬৭; কাওকাবে দুরির ফি ফাযায়েলে আলী, পৃঃ-২০৯, সৈয়দ মোঃ সালে কাশাফী সুন্নি হানাফী আরিফ বিল্লাহ; আল্লামা শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী-মাদারিজুন নবুওয়াত, খঃ-২, পৃঃ-৯০, (ইঃ, ফাঃ)]।
আহলে বাইত (عليه السلام)-এর অনুসরণ ব্যতিত ঈমানদার হওয়া যাবে না। কোন আমল কাজে আসবে না।
আহলে সুন্নাতের প্রখ্যাত আলেম আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ূতি লিখেছেন যে, রাসুল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন যে, “দেখ আমার আহলে বাইত-এর অনুসরণকে নিজেদের জন্য অতি আবশ্যকীয় কর্তব্য বলে মনে করবে, কারণ যে ব্যক্তি অন্তরে তাঁদের মহব্বতসহ আল্লাহর নিকট কিয়ামতে উপস্থিত হবে, সে আমার শাফায়াতে জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং আল্লাহর কসম আমার আহলে বাইত-এর অনুসরণ ব্যতিত কোন ব্যক্তির কোন আমল (নামায, রোজা, যাকাত, হজ্জ সকল ইবাদাত) উপকারে আসবে না”।
[সূত্রঃ আল্লামা জালাল উদ্দিন সূয়ূতীর এহইয়াউল মাইয়াত, পৃঃ-৩; আল্লামা ইবনে হাজার মাক্কী, সাওয়ায়েকুল মুহরেকা, পৃঃ-১১২]।
রাসুল (صلى الله عليه و آله و سلم) আরও এরশাদ করেছেন, “আল্লাহর কসম কোন মুসলমানের অন্তরে ঈমান ততক্ষণ পর্যন্ত প্রবেশ করতে পারে না, যতক্ষণ না আমার আহলে বাইতকে আল্লাহর নির্দেশনানুযায়ী ও আমার আত্মীয়তার কারণে অনুসরণ (আনুগত্যপূর্ণ ভালোবাসা) না করবে”।
[সূত্রঃ আল্লামা জালাল উদ্দিন সুয়ূতীর এহইয়াউল মাইয়াত, পৃঃ-৩; আল্লামা ইবনে হাজার মাক্কী, সাওয়ায়েকুল মুহরিকা, পৃঃ-১১২]।
আহলে বাইত (عليه السلام)-এর অমান্যকারীদের হাউজে কাউসারে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় বিতাড়িত করে দেয়া হবে।
আল্লামা ইবনে হাজার মাক্কী বর্ণনা করেন যে, নবী (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন, “আমার আহলে বাইতের শত্রুতাকারীগণ হাউজে কাউসারের নিকট পৌছিলে তাদেরকে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় বিতাড়িত করে দয়া হবে”।
[সূত্রঃ ইবনে হাজার মাক্কীর, সাওয়ায়েকুল মোহরিকা, পৃঃ ১০৪]।
আহলে বাইত (عليه السلام)-ই জান্নাত ও জাহান্নামের বণ্টনকারী।
❏ হাদিস ৯ :
আল্লামা আলী হামদানী শাফেয়ী লিখিয়াছেন যে, “রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন, আল্লাহ পাক কিয়ামতে জান্নাত ও জাহান্নামের চাবি আমাকে পাঠাইবেন আমি সেই চাবি আমার আহলে বাইতকে দিব তাঁরা যাকে ইচ্ছা জান্নাতে পাঠাবেন এবং যাকে ইচ্ছা জাহান্নামে পাঠাবেন”।
[সূত্রঃ আল্লামা আলী হামদানী শাফেয়ীর-মোয়াদ্দাতুল কুরবা, পৃঃ-৩১; ইবনে হাজার মাক্কীর সাওয়ায়েকুল মুহরিকা, পৃঃ-৭৫]।
❏ হাদিস ১০ :
আহলে বাইত (عليه السلام)-এর ভালোবাসা ও অনুসরণ, সাতটি কঠিন স্থানে কাজে আসবে।
হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসুদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন যে, আমার আহলে বাইতের ভালোবাসা অনুসরণ, সাতটি কঠিন স্থানে কাজে আসবে ও সহায়ক হবে।
(১) মৃত্যুর সময় (যখন রূহ কবজ করা হবে),
(২) কবরে (কবরের আযাব থেকে রক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে),
(৩) কিয়ামত বা হাশরে (কেউ কাউকে চিনবে না, ইয়া নাফসি),
(৪) আমলের (কৃতকর্মের) হিসাব নিকাশের সময়,
(৫) আমলের পরীক্ষার সময়,
(৬) যখন আমল ওজন করা হবে,
(৭) পুলসিরাত অতিক্রম করার সময়।
[সূত্রঃ কাওকাবে দুরির ফি ফাযায়েলে আলী, পৃঃ-২১৯, সৈয়দ মোঃ সালে কাশাফী সুন্নি হানাফী আরিফ বিল্লাহ; ওবাইদুল্লাহ ওমরিতসারী-আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৫৬৫]।
হযরত ফাতেমা (عليه السلام) জান্নাতের সকল মহিলাদের নেত্রী ও ইমাম হাসান-হোসাইন (عليه السلام) সমস্ত জান্নাতি যুবকদের সরদার।
❏ হাদিস ১১ :
হযরত আবু সাইদ খুদরী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসুল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন, “হাসান-হোসাইন জান্নাতি যুবকদের নেতা। (একই হাদীস, হযরত আলী, হযরত ওমর, আবদুল্লাহ্ বিন ওমর, ও আবু হুরাইরা থেকেও বণির্ত হয়েছে) হযরত হুযাইফা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেন, একটি ফেরেশতা যিনি ইতিপূর্বে পৃথিবীতে কখনো আসেননি। তিনি আল্লাহর নিকট অনুমতি চাইলেন যে তিনি যেন আমাকে সালাম দিতে পারেন এবং আমাকে সুসংবাদ দিতে পারেন যে, ফাতেমা (عليه السلام) জান্নাতের মহিলাদের নেত্রী এবং হাসান-হোসাইন জান্নাতের সকল যুবকদের নেতা”।
[সূত্রঃ সহীহ তিরমিযী, খঃ-৬, হাঃ-৩৭৬৮ (ইঃ ফাঃ); সহীহ্ তিরমিযী (সকল খণ্ড একত্রে), পৃঃ-১০৮১, হাঃ-৩৭৩০, (তাজ কোং); মেশকাত শরীফ, খঃ-১১, হাঃ-৫৯০৩, (এমদাদীয়া); তিরমিযী আল জামউস সুন্নাহ, খঃ-৫, পৃঃ-৬৫৬, হাঃ-৩৭৬৮; নাসায়ী আস সুনানুল কুবরা, খঃ-৫, পৃঃ-৫০, হাঃ-৮১৬৯; ইবনে হিববান-আস সহীহ্, খঃ-১৫, পৃঃ-৪১২, হাঃ-৬৯৫৯; আহম্মদ ইবনে হান্বাল আল মুসনাদ, খঃ-৩, পৃঃ-৩, হাঃ-১১০১২]।
আহলে বাইত (عليه السلام)-গণই নাজাতের তরী বা ত্রাণকর্তা।
❏ হাদিস ১২ :
রাসুল (صلى الله عليه و آله و سلم) -এর প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবু জার আল গিফারী (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم)-কে বলতে শুনেছি, “আমার আহলে বাইত এর সদস্যগণ {আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন (عليه السلام)}। আমার উম্মতের জন্য তেমনি নাজাতের তরী, যেমনি আল্লাহর নবী নুহ (عليه السلام)-এর তরী মহাপ্রলয়ের সময় তার জাতির জন্য আশ্রয় ও নাজাতের তরী ছিল। অর্থাৎ যারাই হযরত নুহ (عليه السلام)-এর তরীতে উঠেছিল তারাই মহাপ্রলয় থেকে নাজাত পেয়েছিল (হযরত নূহের ছেলে তরীতে উঠেনি আল্লাহ্ তাকেও ক্ষমা করেন নি) তেমনি এই উম্মতের যারা আমার আহলে বাইতকে অনুসরণ করবে তারাই নাজাত পাবে এবং যারা অনুসরণ করবে না তারা সুষ্পষ্ট পথভ্রষ্ট (জাহান্নামী) হবে”।
[সূত্রঃ মেশকাত শরিফ,খঃ-১১, হাঃ-৫৯২৩; কাশফুল মাহজুব, পৃঃ-৭০, (দাতাগঞ্জ বকস); মাসিক মদীনা (সপ্টম্বর ২০০০) পৃঃ-৬; পীরের মর্যাদা ও ভুমিকা, পৃঃ-১১৪, (মুহাঃ মুখলেসুর রহমান এডভোকেট); জ্ঞানধারা, পৃঃ-১০৬, (মুখলেসুর রহমান); আস সাওয়ায়েকুল মুহরিকা (ইবনে হাজার হায়সামী), পৃঃ-২৩৪; তাফসীরে কাবির, খঃ-২৭, পৃঃ-১৬৭; মুসনাদে হাম্বাল,খঃ-২, পৃঃ-৭৮৬; কানযুল উম্মাল, খঃ-৬, পৃঃ-২৫৬; মানাকেবে ইবনে মাগজিলি, পৃঃ-১৩২; মুস্তাদরাকে হাকেম, খঃ-৩, পৃঃ-১৫১, খঃ-২, পৃঃ-৩৪৩, কেফায়াতুত তালেব, পৃঃ, ২৩৩, আরবাইন নাবহানী,পৃঃ, ২১৬, তারিখে খোলাফা, পৃঃ, ৩০৭; যাখায়েরুল উকবা, পৃঃ-২০; সাওয়ায়েকুল মুহরিকা, পৃঃ-১৫০ (ইবনে হাজার মাক্কী; ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৩৭০, ৩০৮; মুয়াদ্দাতুল কুরবা, পৃঃ-৩৮, ১১১; নুরুল আবসার, পৃঃ-১১৪; আল তাবরানি, খঃ-৩, পৃঃ-৩৭-৩৮; হিলিয়াতুল আউলিয়া, খঃ-৪, পৃঃ-৩০৬; আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৫৫৯ (উর্দ্দু); আল হাকিম, মুস্তাদরাক, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩৪৩, তিনি বলেন হাদিসটি মুসলিমের শর্তে সহীহ; সুয়ূতি রহ., ‘আল জামে আল সাগীর’, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৫৩৩, হাদিসটি হাসান; ইমাম সাখাভী রহ., আল বালদানাইত, পৃষ্ঠা ১৮৬, হাদিসটি হাসান]।
আহলে বাইত (عليه السلام)-এর (আনুগত্যপূর্ণ) ভালোবাসা, নবীজির ভালোবাসা, নবীজির ভালোবাসা, আল্লাহর ভালোবাসা।
❏ হাদিস ১৩ :
হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেছেন, “তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস কেননা মহান আল্লাহ তাঁর নেয়ামত হতে তোমাদিগকে রিজিক প্রদান করছেন। আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে আমাকে ভালোবাস (রাসূলকে)। আর আমার ভালোবাসা পেতে হলে আমার আহলে বাইতকে (আনুগত্যপূর্ণ) ভালোবাস”।
[সূত্রঃ সহীহ্ তিরমিযি, (সকল খণ্ড একত্রে), পৃঃ-১০৮৫, হাঃ-৩৭৫১, (তাজ কোং); সহীহ তিরমিযি, খঃ-৬, হাঃ-৩৭২৮, (ইঃ সঃ); মেশকাত শরীফ, খঃ-১১, পৃঃ-১৮৮, হাঃ- ৫৯২২, (এমদাদিয়া লাইঃ); শেইখ সুলাইমান কান্দুযী-ইয়ানাবিউল মুয়াদ্দাত, পৃঃ-৩১৭, (উর্দ্দু); কাওকাবে দুরির ফি ফাযায়েলে আলী, পৃঃ-২০০, সৈয়দ মোঃ সালে কাশাফী সুন্নি হানাফী আরিফ বিল্লাহ; ওবাইদুল্লাহ ওমরিতসারী-আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৫৭৯]।
কিয়ামতের দিন, আহলে বাইত (عليه السلام) ও তাঁদের আশেকরা আল্লাহর আরশের নিচে একই স্থানে থাকবেন।
❏ হাদিস ১৪ :
হযরত আলী (عليه السلام) হতে বর্ণিত, হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) ইরশাদ করেন, “আমি, আলী, ফাতেমা, হাসান ও হোসাইন এবং আমাদের সকল আশেকরা একই স্থানে একত্রিত হবে। কিয়ামতের দিন আমাদের পানাহারও একত্রে হবে, মানুষের বিচারের ফয়সালা হওয়া পর্যন্ত।”
[সূত্রঃ তাবরানী, আল মু’জামুল কবির, খঃ-৩, পৃঃ-৪১, হাঃ-২৬২৩; হায়সামী, মাজমাউয যাওয়ায়েদ, খঃ-৯, পৃঃ-১৬৯; আহমাদ ইবনে হাম্বাল,আল মুসনাদ, খঃ-১, পৃঃ-১০১; বাযযার, আল মুসনাদ, খঃ-৩, পৃঃ-২৯, হাঃ-৭৭৯; শায়বানী আস সুন্নাহ্, খঃ-২, পৃঃ-৫৯৮, হাঃ-১৩২২; ইবনে আসীর উসদুল গাবা, খঃ-৭, পৃঃ-২২০; ইবনে আসাকির তারিখে দামেশ্ক, খঃ-১৩, পৃঃ-২২৭]।
❏ হাদিস ১৫ :
মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) এরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি দুনিয়াতে যাকে ভালোবাসবে বা অনুসরণ করবে তার সাথে তার হাশর হবে”।
[সূত্রঃ সহীহ্ মুসলিম, খঃ-৭, হাঃ-৬৪৭০, (ই,ফাঃ); সহীহ্ তিরমীজি, (সকল খণ্ড একত্রে) পৃঃ-৭২৮, হাঃ-২৩৪০ (তাজ কোং)]।
❏ হাদিস ১৬ :
হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) বলেন, “(শেষ বিচারের দিবসে) আমার শাফায়াত হবে মুসলিম উন্মাহর মধ্যে তাদের জন্য যারা আমার আহলে বাইতকে (অনুসরণ) মহব্বত করবে”।
[সূত্রঃ খতীব বাগদাদী, তারিখ বাগদাদ, খঃ -২, পৃঃ-১৪৬; হিন্দী, কানযুল উন্মাল, খঃ-৬, পৃঃ-২১৭; সূয়ুতি ইয়াহইয়া আল মাইয়্যিত, পৃঃ-৩৭; আরজাহুল মাতালেব, পৃঃ-৫৬৬, ৫৮১ (উর্দ্দু)]।
❏ হাদিস ১৭ :
হযরত রাসূল (صلى الله عليه و آله و سلم) ইমাম হাসান-হোসাইনের হাত ধরে বললেন, “যে ব্যক্তি আমাকে এবং এই দু‘জনকে (হাসান-হোসাইন)-কে ভালোবাসবে সাথে সাথে তাঁদের পিতা-মাতাকে (আলী ও ফাতেমা) কে ভালোবাসবে সে কিয়ামত দিবসে আমার সাথেই থাকবে”।
[সূত্রঃ জামে আত তিরমিযী, খঃ-৬, পৃঃ-৩৩১, হাঃ-৩৬৭০, (ইঃ, সঃ); তিরমিযী, আল-জামেউস সহীহ্, খঃ-৫, পৃঃ-৬৪১, হাঃ-৩৭৩৩; আহমদ ইবনে হাম্বাল, আল মুসনাদ, খঃ-১, পৃঃ-৭৭, হাঃ-৫৭৬; আহম্মদ ইবনে হাম্বাল-ফাযায়িলুস সাহাবা, খঃ-২, পৃঃ-৬৯৩, হাঃ-১১৮৫; তাবরানী-আল মু’জামুল কবির, খঃ-৩, পৃঃ-৫০, হাঃ-২৬৫৪]