ফিরআউন তখন বনি ইসরাঈলের সমস্ত পুত্র সন্তানদেরকে হত্যা করছিল। ঠিক তখনই জন্ম গ্রহণ করলেন মূসা আলাইহিস সালাম। মূসা আলাইহিস সালাম এর মা তখন খুবই আতংকগ্রস্থ হয়ে পরেন। বুঝে উঠতে পারছিলেন না কিভাবে শিশু মূসাকে রক্ষা করবেন। যখনই এই ভীত, দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থার সম্মুখীন ঠিক তখনই আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আসল আশার আলো।
আল্লাহ তায়ালা সু-কৌশলে মূসা আলাইহিস সালামকে ফিরআউন থেকে রক্ষা করলেন তারই মাধ্যমে। মূসা আলাইহিস সালাম এর মায়ের কাছে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে নির্দেশ আসল- ‘আমি মূসা জননীকে আদেশ পাঠালাম যে, তাকে স্তন্য দান করতে থাক। অতঃপর যখন তুমি তার সম্পর্কে বিপদের আশংকা কর, তখন তাকে দরিয়ায় নিক্ষেপ কর এবং ভয় করো না, দুঃখও করো না। আমি অবশ্যই তাকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দেব এবং তাকে পয়গম্বরগণের একজন করব।’
‘অতঃপর ফিরআউন পরিবার মূসাকে কুড়িয়ে নিল, যাতে তিনি তাদের শত্রু ও দুঃখের কারণ হয়ে যান। নিশ্চয় ফেরাউন, হামান ও তাদের সৈন্যবাহিনী অপরাধী ছিল। ফেরাউনের স্ত্রী বলল- এ শিশু আমার ও তোমার নয়নমণি, তাকে হত্যা করো না। এ আমাদের উপকারে আসতে পারে অথবা আমরা তাকে পুত্র করে নিতে পারি। প্রকৃতপক্ষে পরিণাম সম্পর্কে তাদের কোনো খবর ছিল না।
সকালে মূসা জননীর অন্তর অস্থির হয়ে পরল। যদি আমি তাঁর হৃদয়কে দৃঢ় করে না দিতাম, তবে সে মূসা জনিত অস্থিরতা প্রকাশ করেই দিতেন। দৃঢ় করলাম, যাতে তিনি থাকেন বিশ্বাসীগণের মধ্যে। তিনি মূসার ভগিনীকে বললেন, তার পেছন পেছন যাও। সে তাদের অজ্ঞাতসারে অপরিচিতা হয়ে তাকে দেখতে যেতে লাগল। পূর্ব থেকেই আমি ধাত্রীদেরকে মূসা থেকে বিরত রেখেছিলাম। মূসার ভগিনী বলল, আমি তোমাদেরকে এমন এক পরিবারের কথা বলব কি,
যারা তোমাদের জন্য একে লালন-পালন করবে এবং তারা হবে তার হিতাকাঙ্ক্ষী? অতঃপর আমি তাকে জননীর কাছে ফিরিয়ে দিলাম, যাতে তার চক্ষু জুড়ায় এবং তিনি দুঃখ না করেন এবং যাতে তিনি জানেন যে, আল্লাহর ওয়াদা সত্য, কিন্তু অনেক মানুষ তা জানে না।’ [১]
আল্লাহ তায়ালা মূসা আলাইহিস সালাম কে কৌশলে তাঁর মায়ের কাছেই ফিরিয়ে দিলেন এবং তাকে রক্ষা করলেন তারই শত্রু দ্বারা। আপনাকে হয়তো বিপদ, দুঃখ, কষ্ট চারপাশ থেকে ঘিরে ধরেছে। উত্তোলনের পথ পাচ্ছেন না। হতাশ হয়ে গেছেন। আত্মহত্যার পরিকল্পনা করছেন। ওয়াল্লাহি, আমার ভাই ও বোন- আত্নহত্যা কোনো সমাধান নয়।
বরং আল্লাহর ওপর ভরসাটাই সমাধান। আল্লাহ তায়ালা সর্ব বিষয়ের ওপর শক্তিমান। তিনি আপনাকে হয়তো কোনো কৌশলে সেই মূসা আলাইহিস সালাম এর মতো রক্ষা করবেন। বিপদ থেকে নিষ্কৃতির পথ দেখিয়ে দিবেন। শুধু প্রয়োজন তওয়াক্কুল আর ধৈর্য্য।
শুধু বলুন, ‘আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনি কতই উত্তম কর্মব্যবস্থাপক।’ [২]
Reference:
[১] সূরা ক্বাসাস, আয়াত: ৭-১৩।
[২] সূরা আলে ইমরান, আয়াত- ১৭৩।



Users Today : 38
Users Yesterday : 357
This Month : 38
This Year : 171909
Total Users : 287772
Views Today : 5758
Total views : 3413321