প্রশ্নঃ রাসুল (ﷺ) কি আমাদের মত মানুষ?
উত্তরদাতাঃ মাসুম বিল্লাহ সানি
- হাদিসগুলো সংক্ষেপে দেখে নেই
হাদিস ১
হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
عن عبدالله بن عمرو رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم لست كاحد منكم
প্রিয়নবী (ﷺ) ইরশাদ করেন, “আমি তোমাদের কারো মত নই।”
● বুখারী শরীফ- কিতাবুস সিয়াম- ১ম খন্ড ২৬৩ পৃষ্ঠা – হাদীস ১৮৪০
● মুসলিম শরীফ ১৫৮৭
● আবু দাউদ শরীফ/১৩৭
হাদিস ২
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
عن عبد الله بن عمر رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم اني لست مثلكم
হুযূর (ﷺ) ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আমি তোমাদের অনুরূপ নই।”
● বুখারী শরীফ, কিতাবুস সিয়াম, ১ খন্ড ২৬৩ পৃষ্ঠা।
● ফতহুল বারী ৪/১৬৪
হাদিস ৩
হযরত আবূ সাঈদ খুদুরী (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
عن ابي سعيد رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم اني لست كهيتكم
রাসুলে কারীম (ﷺ) ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আমি আকৃতিগতভাবে তোমাদের মত নই।”
(বুখারী ১/২৬৩, ফতহুল বারী ৪/১৬৫)
হাদিস ৪
হযরত আবূ হুরায়রা(رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
عن ابي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي الله عليه و سلم ليكم مثلي
হুযুর রাহমাতুল্লিল আলামীন (ﷺ) ইরশাদ করেন, “তোমাদের মধ্যে আমার অনুরূপ কে রয়েছে?”
(বুখারী ১/২৬৩, ফতহুল বারী ৪/১৬৭)
হাদিস ৫
উম্মুল মু’মেনীন হযরত আয়েশা (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,… তাঁরা (সাহাবীগণ) আরজ করলেন, “কিন্তু আপনি বিরতিহীন সওম পালন করছেন? তিনি (ﷺ) বললেনঃ তোমাদের আমার মতো না। (আমি যখন রাত্রি যাপন করি) আমার প্রতিপালক আমাকে খাওয়ান এবং পান করান।”
[সহিহ বুখারীঃ, হাদিস ১৮৭]
হাদিস ৬
খলীফাতুল মুসলিমিন, হযরত আলী (رضي الله عنه) বলেন, لم ارقبله و لا بعده مثله
অর্থ : আমি হুজুর পাক (ﷺ) এর পূর্বে এবং পরে তাঁর মত আর কাউকে দেখিনি!”
● তিরমীযিঃ ২য় খন্ড ২০৫ পৃষ্ঠা- হাদীস নম্বার ৩৬৩৭
অসংখ্য হাদিস থেকে মূল বিষয়বস্তু একত্রে দেয়া হলঃ
🕋 এক বর্ণনায়, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
….”তোমাদের কে আছো আমার মত?”
🕋 অপর বর্ণনায়, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
….”আমি তোমাদের কারো মত না!”
🕋 অপর বর্ণনায়, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
….”তোমাদের কেহ আমার অনুরূপ (সাদৃশ্য) না,
আমি যখন রাতে ঘুমাই তখন আল্লাহ্ তা’য়ালা আমাকে আহার করান এবং পান করান!“
তথ্যসূত্রঃ
সহিহ বুখারী, হাদিস ৩: ১৮২
সহিহ বুখারী, হাদিস ৩: ১৮৩
সহিহ বুখারী, হাদিস ৩: ১৮৪
সহিহ বুখারী, হাদিস ৩: ১৮৫
সহিহ বুখারী, হাদিস ৩: ১৮৭
সহিহ বুখারী, হাদিস ৩: ১৮৮
————————————————————
- হাদিসগুলো সম্পূর্ণ দেখে নেই
🕋 আনাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত যে, (কোন এক) মাসের শেষভাগে নাবী বিরতিহীন সওম রাখলেন এবং আরো কতিপয় লোকও বিরতিহীনভাবে সওম রাখল। এ সংবাদ নাবী (ﷺ)-এর কাছে পৌঁছলে তিনি বললেনঃ যদি আমার এ মাস প্রলম্বিত হত, তবুও আমি এভাবে বিরতিহীন সওম পালন করতাম। যাতে অধিক কষ্টকারীরা তাদের কষ্ট করা ত্যাগ করে। আমি তো তোমাদের মত নই, আমার প্রতিপালক আমাকে আহার করান এবং পান করান। সুলায়মান ইবনু মুগীরাহ আনাস (رضي الله عنه)-এর সূত্রে নাবী (ﷺ) থেকে হুমায়দ-এর অনুসরণ করেছেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪৭, সহীহ বুখারী (তাওহীদ) / অধ্যায়ঃ ৯৪/ কামনা, হাদিস নম্বরঃ ৭২৪১)
🕋 আবূ হুরাইরাহ (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বিরতিহীন সওম পালন করতে নিষেধ করলেন। সহাবীগণ বললেন, আপনি বিরতিহীন সওম পালন করছেন? তিনি বললেনঃ তোমাদের কে আছ আমার মতো? আমি তো রাত কাটাই যাতে আমার প্রতিপালক আমাকে খাওয়ান ও পান করান। কিন্তু তারা যখন বিরত থাকতে অস্বীকৃতি জানাল, তখন তিনি তাদেরসহ একদিন, তারপর আর একদিন সওম পালন করলেন। তারপর তারা নতুন চাঁদ দেখতে পেলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ যদি চাঁদ আরো (কয়দিন) পরে উদিত হত, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদের (সওম) বাড়াতাম। তিনি যেন তাদেরকে শাসন করছিলেন।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
১.সহীহ বুখারী (তাওহীদ) / অধ্যায়ঃ ৯৪/ কামনা (كتاب التمنى), হাদিস নম্বরঃ ৭২৪২।
২.সহীহ বুখারী (ইফাঃ), হাদিস নম্বরঃ [1841]
অধ্যায়ঃ ২৩/ সাওম বা রোজা (كتاب الصوم)]
(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৭৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪৮)
🕋 আবূ হুরাইরা (رضي الله عنه) হতে বৰ্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ তোমরা ইফতার না করে লাগাতার সওম রেখো না। তখন মুসলিমদের মধ্য হতে জনৈক ব্যক্তি বলে উঠলো: হে আল্লাহর রসূল! আপনি তো ইফতার না করে লাগাতার সওম রাখেন। উত্তরে নাবী (ﷺ) বললেন, তোমাদের মধ্যে আমার মত কে আছ? আমি রাত কাটাই তাতেই আমার রব আমাকে খাওয়ান ও পান করান। কিন্তু তাঁরা লাগাতার সওম রাখা থেকে বিরত হলো না। ফলে তাদের সঙ্গে নাবী (ﷺ)ও দু’দিন অথবা (বর্ণনাকারী বলেছিলেন) দু’ রাত লাগাতার সওম রাখলেন। এরপর তারা নতুন চাঁদ দেখতে পেলেন। তখন নাবী (ﷺ) বললেন, যদি চাঁদ (আরও কয়েক দিন) দেরী করে উঠত, তাহলে আমিও (লাগাতার সওম রেখে) তোমাদের সওমের সময়কে বাড়িয়ে দিতাম, তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জন্য। (বিসাল অর্থ পানাহার না করেই বিরতিহীনভাবে সওম পালন করা)
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
১.ইবনে হাজার আসকালানীঃ বুলুগুল মারাম / অধ্যায়ঃ পর্ব – ৫ঃ সিয়াম (كتاب الصيام), হাদিস নম্বরঃ ৬৬২,
২.বুখারী ৬৭০১,
৩.মুসলিম ১৬৪২,
৪.তিরমিযী ১৫২৭,
৫.নাসায়ী ৩৮৫২, ৩৮৫৩, ৩৮৫৪,
৬.আবূ দাউদ ২৩০১,
৭.আহমাদ ১১৬২৭, ১১৭১৭, ১২৪৭৮
🕋 ইবরাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (رضي الله عنه) খেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছেন যে, তোমরা সাওমে বেসাল করবে না। তোমাদের কউ যদি সাওমে বেসাল করতে চায় , তবে যেন সাহরীর সময় পর্যন্ত করে। সাহাবাগণ বললেন , ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি তো সাওমে বেসাল পালন করেন? তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের মত নই। আমি এভাবে রাত যাপন করি যে, আমার জন্য একজন আহারদাতা রয়েছেন যিনি আমাকে আহার করান, একজন পানীয় দানকারী আছেন যিনি আমাকে পান করান।
হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
[সহীহ বুখারী (ইফাঃ) / অধ্যায়ঃ ২৩/ সাওম বা রোজা (كتاب الصوم), হাদিস নম্বরঃ ১৮৪৩]
- ইমামগণের বক্তব্যঃ
▶হযরত ইমাম আবু হানীফা (رحمة الله) বলেন–
والله ياسين مثلك لم يكن
في العالمين وحق من انباك
অর্থ – আল্লাহ পাকের কসম ! হে ইয়াসিন (ﷺ), সারা জাহানে আপনার কোন মেছাল নাই !”
● কাসীদায়ে নু’মান লি ইমাম আবু হানীফা -৩৭ নং পংক্তি।
▶যেমন কবি বলেছেন–
محمد بشر ليس كالبشر ياقوت حجر ليس كالحجر
অর্থ – হুজুর পাক (ﷺ) বাশার তবে তিনি অন্য বাশারের মত নন, যেমন ইয়াকুত পাথর, অন্য পাথরের মত নয়।”
🕋”আমিও তোমাদের মত মানুষ এই আয়াতের ব্যাখ্যা।”
▶ হযরত হাওয়া (عليه السلام) আদম সন্তান নন এবং কোন বীর্য দ্বারা সৃষ্টি নয়। তিনি হযরত আদম(عليه السلام) এর বাম পাজরের হাড় দ্বারা সৃষ্টি। (দেখুন তাফসীরে জালালাইন শরীফ) কিন্তু তিনিও মানুষ ছিলেন।
▶ হযরত ঈছা (عليه السلام) কোন বীর্য দ্বারা সৃষ্টি নন কারণ তাঁর পিতা নেই। তিনি আল্লাহর রুহ যা হযরত জিব্রাইল (عليه السلام) ফুক দিয়ে হযরত মরিয়ম (عليه السلام)এর মধ্যে দান করেছিলেন। তা দ্বারা সৃষ্টি কিন্তু তিনিও মানুষ ছিলেন।
▶ তদ্রুপ মাখলুক, এমনকি হযরত আদম (عليه السلام) এর সৃষ্টির হাজার হাজার বছর পূর্বে যখন মাটি পানি কিছুই ছিলনা তখন আল্লাহর নূর দ্বারা হুজুর পাক (ﷺ) এর নূর মোবারক সৃষ্টি।
▶ওহাবীরা এই আয়াত কপি-পেষ্ট করে সব সময়
قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاء رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا
110
অর্থঃ বলুনঃ আমি ও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে।
▶এখানে আরবী শব্দ بَشَرٌ (বাশার) দ্বারা এরা শুধুমাত্র মানুষ বুঝাতে চায়। অথচ সূরা মরিয়মের আয়াত – ১৭ তে بَشَرً (বাশার) দ্বারা ফেরেস্তাকেও বুঝানো হয়েছে। দেখুন মূল আরবী রেওয়াত সহ
فَاتَّخَذَتْ مِن دُونِهِمْ حِجَابًا فَأَرْسَلْنَا إِلَيْهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا
অর্থঃ আমি আমার রুহ (হযরত জিব্রাইল আঃ) কে তাঁর (হযরত মরিয়ম) প্রতি প্রেরণ করেছি, অতঃপর সে (জিব্রাঈল আঃ) তাঁর সামনে একজন পূনাঙ্গ সুঠোম \”বাশার\” বা মানুষ এর আকৃতিতে আত্ম প্রকাশ করেছেন।
▶ওহাবীরা কি এখন বলবে ফেরেস্তারা (হযরত জীব্রাইল আলাইহিস সালাম) আমাদের মত মানুষ? কখনও নয়।
সুতরাং, এর দ্বারা বুঝা গেল بَشَرٌ (বাশার) শব্দ দ্বারা মানুষ বুঝায় না বরং কখনো কখনো মনুষ্য আকৃতিও বুঝায়।
ওহাবী সাধারণ মানুষদের ধোঁকা দিয়ার জন্য এক আয়াত উল্লেখ করে এবং অপর আয়াত গোপন করে।
▶আবদুল হক মোহাদ্দেস দেহলবী (মাদারিজুন নবুওত) কিতাবে প্রথম খন্ডের এজালাতুশ সুবহাত অধ্যায়ে বলেন :قل انماانابشرمثلكم
ও কোরানে এইরূপ যতগুলি আয়াত এসেছে, এইগুলি আয়াতে মুতাসাবিহাতের আওতাভুক্ত।
▶আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতী (রহ)”আল এত্কান কি উলুমুল কোরান” ২খন্ড ২য ও ৩য পৃষ্টা তে বলেন আল কোরআনে যে সমস্ত আয়াতেمثلكم শব্দটি এসেছে, এইগুলি আয়াতে মতাসাবিহাতের আওতাভুক্ত।
মতাসাবিহাত এর অর্থ আল্লাহ এবং রাসুল ছাড়া কেও জানেনা,তাই সর্বসন্মতিক্রমে এই আয়াত দ্বারা কোনো দলিল হতে পারেনা।
▶আল্লাহ তায়ালা মতাসাবিহাত আয়াত সম্পর্কে বলেন :-
“যাদের অন্তরে কপটতা রযেছে,তারাই কেবল মতাসাবিহাত এর দলিল গ্রহণ করেন “আল কোরান “
হজরত জিব্রিয়াল (আ ) নবীজির নিকট মানুষ রূপে আসতেন ,তাই বলে কি জিব্রাইল মানুষ?
যুগে যুগে নবীদের কে আমাদের মত বলেছেন ,কাফেররা (সুরা শুরা /সুরা ইয়াসিন)
▶জালালউদ্দিন রুমী মসনবী সরীফে বলেন- অনুবাদ :
কাফিররাই হজরত মুহাম্মদ (ﷺ) কে বশর বলেছিল ,কিন্তু তারা দেখে না যে, তিনি চন্দ্র কে দিখন্ডিত করেছিল,
তারা বলেছিল “আমরা যেমন বশর নবীও আমাদের মত বশর” যেমন-ঘুমাই ,পানাহার করে ,
তারা অগাত ছিল যে ,আমাদের এবং নবীদের মধ্য বেশুরম পার্থক্য রযেছে।
▶মূর্খদের সাথে তর্ক করতে নিষেধ করা হয়েছে কারন তাদের বদ আকিদার জন্য। সূরা কাহাফ ১১০ নং আয়াতের ব্যাখ্যা আমি দিচ্ছি। আশা করি সবাই একমত হবেন।
1.👉প্রশ্নঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কি ইনসান নাকি ফেরেশতা?
🖋জবাবঃ হ্যাঁ। নিশ্চয়ই তিনি মানব জাতির মধ্যে মানুষ হিসেবে তশরীফ নিয়েছেন। কারণ তামাম মাখলুকাতের মধ্যে একমাত্র মানবজাতিই সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। আর তিনি সেই জাতির অন্তর্ভুক্ত। এজন্যই তাঁকে খাইরুল বাশার বলা হয়। আবুল বাশার হল মানব জাতির পিতা➡ তিনি হলেন হযরত আদম (আঃ) আর খাইরুল বাশার➡ মানে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। তিনি হলেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)।
2.👉প্রশ্নঃ তাহলে সুন্নীরা কেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে ইনসান মানে না?
🖋জবাবঃ আহলে সুন্নত আর ওহাবীদের কথায় ছোট একটা প্যাচঁ আছে যা বিশাল ভুল তাই মানে না।
3.👉প্রশ্নঃ প্যাচঁটা কি বলবেন কি?
🖋জবাবঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বেমিসাল মাখলুক। তাই আমাদের মত বলা মানে আমাদের মত দোষে গুণে ভরা মানুষের সাথে তুলনা করা। এর দ্বারা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে খাট করা হয় এবং তাঁরই নগণ্য উম্মতের সাথে সাইয়্যিদুল আম্বিয়ার (নবীগণেরও সর্দার যিনি তাঁর) তুলনা করা হয়। (নাউযুবিল্লাহ)
4.👉প্রশ্নঃ তাহলে আল্লাহ আল কোরআনে আমাদের মত বলেছেন কেন?
🖋জবাবঃ এই আয়াতের শানে নুযুল গুলো এক এক করে দেখুন গ্রহণযোগ্য পূর্ববর্তী তফসীর গুলো থেকে যেগুলো সুন্নী, ওহাবী, সালাফী সবাই এক বাক্যে মানতে বাধ্য। তখন নিজেই বুঝে যাবেন। কাফেরদের একথা বলা হয়েছে অথবা কখনও উম্মতকে অভয় দিতে বলা হয়েছে।
5.👉প্রশ্নঃ আমাকে একটু বুঝিয়ে বলুন ভাই ?
🖋জবাবঃ দেখুন, ঈসা (عليه السلام) এর কিছু মোজেযা ছিল কিন্তু তাই দেখে ওনাকে তাঁর উম্মতগণ ইশ্বরের পুত্র বলা শুরু করল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে যেন এমনকিছু না মনে করেন সেজন্য কিছু হাদিসে সতর্ক করেছেন। এর মানে এটাই সীমার বাইরে গিয়ে কেউ যেন কুফরি না করেন ।
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর পুরু জিন্দেগি অগণিত অসংখ্য মোজেযার মহাসাগর। তাই দেখে কাফিররা ফতোয়া দিল জাদুকর, রহমতের নবীকে সাধারন মানুষ ভয় পেয়ে দূরে সরতে থাকে তখন সেই পরিস্থিতিতে আল্লাহ কি এই আয়াত নাযিল করবেন না?
🕋[হে রাসূল আপনি] বলুন,”আমিও তোমাদের মত মানুষ কিন্তু আমার নিকট ওহী আসে যে তোমাদের ইলাহ’ই একমাত্র ইলাহ।”
●কাহাফ -১১০
আমাকে উত্তর দিন এ ছাড়া আর কি শ্রেষ্ঠ উত্তর ছিল? আল্লাহ কি এমতবস্থায় এই আয়াত নাযিল করবেন না?
◾বিশ্ববিখ্যাত তফসির রুহুল বয়ান এ আরও বলা হয়েছে,”আল্লাহ নিজে এই কথা বলে রাসুল কে উদারতা শিক্ষা দিয়েছেন।
6.👉প্রশ্নঃ আচ্ছা তাহলে বলুন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তো মানুষ ছিলেন এটা কিভাবে বলা আদব হবে?
🖋জবাবঃ এইভাবে মনে রাখবেন যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বাশার ছিলেন তবে বেমিসাল মাখলুক। যিনি মর্যাদায়, পবিত্রতায়, আমল-আখলাকে, সৌন্দর্যে, অন্তর-বাহির, আপাদমস্তকের পবিত্রায় আর সম্মানে কোন দিক থেকে, কোন দিন আপনে আমার মত মানুষ নয়।
আসুন এবার কুরআন হাদিসের আলোকে যুক্তিসহ মিলিয়ে নেই –
🕋[হে রাসূল আপনি] বলুন,”আমিও তোমাদের মত মানুষ (কিন্তু তোমরা আমার মত না) আমার নিকট ওহী আসে যে তোমাদের ইলাহ’ই একমাত্র ইলাহ।”
●হামীম- সিজদাহ ৬
●কাহাফ -১১০
🕋 “তাদের পয়গাম্বর গণ বললেন,”আমরা ও তোমাদের মতই মানুষ।” ●ইব্রাহীম -১১
————————————————————
🕋 ওরা (কাফিররা) বলল,
”তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ দয়াময় আল্লাহ্ তো কিছুই অবতীর্ণ করেন নি।”
●ইয়াছিন ১৫
●ইব্রাহীম ১০
●শুয়ারা- ১৮৬
●হুদ ২৭
————————————————————
🕋 আল্লাহ বলেন, ”যদি তোমরা তোমাদের মতই এক জনের আনুগত্য কর তবে নিশ্চিত রুপেই তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” ●মুমিনুন ৩৪
————————————————————
🕋 “তিনি পুরা মাটির মত শুকনো মাটি দ্বারা মানুষ কে সৃষ্টি করেছেন।” ●আর-রাহমান ১৪
🕋 ”কাদা মাটি থেকে তিনি মানুষ কে সৃষ্টি করেছেন।“●আস-সিজদাহ ৭
————————————————————
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সৃষ্টি আল্লাহর নূর থেকে।
🕋 হযরত জাবির (رضي الله عنه) আরজ করলেন,
ইয়া রাসুলুল্লাহ (ﷺ)! আমার পিতা-মাতা আপনার কদম মোবারক এ কোরবানি হোক, আপনি বলে দিন যে আল্লাহ্ পাক সর্ব প্রথম কি সৃষ্টি করেছেন? রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বললেন,”হে জাবের, নিশ্চই আল্লাহ্ তা’য়ালা সর্ব প্রথম স্বীয় (নিজ) নূর হতে তোমার নবীর নূর মোবারক সৃষ্টি করেছেন !!”
- তথ্যসূত্রঃ
১। ইমাম আব্দুর রাযযাক (رحمة الله) ওফাত.২১১হি, হাদিসটি তার ‘মুসান্নাফ’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। এই তথ্যটি আল্লামা ঈসা মানে হিমইয়ারী (মু.জি.আ.)সংকলিত ‘জুযউল মুফকুদ” কিতাব হতে সংগ্রহিত।
২। ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) ওফাত.৪৫৮হি স্বীয় প্রসিদ্ধ সিরাত সম্পর্কিত হাদিস গ্রন্থ ‘দালায়েলুন নবুয়ত’ এর ১৩ তম খন্ডের ৬৩ পৃষ্ঠা। মাওলানা নুরু হকঃ নূরে মুজাসসাম (ﷺ) হতে সংগৃহিত, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।
৩। বুখারী শরীফের ব্যাখ্যাকার ইমাম কুস্তালানী (رحمة الله)ওফাত,৯২৩হি। প্রসিদ্ধ সিরাত গ্রন্থ “মাওয়াহেবে লাদুন্নীয়া” এর ১/১৫ পৃষ্ঠায় ইমাম আবদুর (رحمة الله) এর ‘মুসান্নাফ’ কিতাবের বরাতে উক্ত হাদিসটি সংকলন করেছেন।
৪। আল্লামা ইমাম যুরকানী (رحمة الله)ওফাত,১১২২হি, স্বীয় প্রসিদ্ধ সিরাত গ্রন্থ “শরহুল মাওয়াহেব এর ১৮৯ পৃষ্ঠায় ইমাম আব্দুর রাযযাক সূত্রে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেন।
৫। আল্লামা আব্দুল জলিল (رحمة الله) নুর নবী (ﷺ) গ্রন্থে হাদীস টি উল্লেখ করেন।
৬। আল্লামা আজলুনী (رحمة الله) ওফাত,১১৬২হি, তার কাশফুল খাফা’ এর ১/৩১১ পৃষ্ঠায় হাদিস নং ৮১১ এ আবদুর রাযযাক (رحمة الله) এর বরাতে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেন। আল্লামা আযলুনী আরাে বলেছেন- ইমাম আব্দুর রাযযাক উক্ত হাদিসটি সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন। | উক্ত হাদিসকে জাল দাবীকারী আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, মতিউর রহমান এবং জাকারিয়া হাসনাবাদী তাদের বইয়ের অসংখ্য স্থানে কাশফুল খাফা’ কিতাব হতে দলীল গ্রহণ করেছেন। তাই তাদেরকে বলতে চাই একটু মাথা ঠান্ডা করে চিন্তা করে কাশফুল খাফা গ্রন্থটি খুলে দেখুন ইমাম আব্দুর রাযযাক (رحمة الله)’র মুসান্নাফে হাদিসটি আছে কি নেই বলেছেন। আল্লাহর কাছে পানাহ চাই এই সমস্ত সত্য গোপনকারী। কেননা আল্লাহ বলেন, “তার চেয়ে বড় যালিম কে যে সত্যকে গােপন করে? আল-কোরআন
৭। ইমাম বুরহানুদ্দিন হালবী আশ শাফেয়ী (رحمة الله) ওফাত,১০৪৪হি স্বীয় সিরাত গ্রন্থ “সিরাতে হালবিয়্যাহ” এর ১/৩৭ পৃষ্ঠায় ইমাম আবদুর রায় সূত্রে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেন।
৮। আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিস দেহলভী (رحمة الله) স্বীয় প্রসিদ্ধ সিরাত। ‘মাদারিজুন নবুয়াত” (ফাসী, মুদ্রণ: মাকতাবা এ নূরিয়্যাহ,করাচী,পাকিস্তান) এ খণ্ডের ৫পৃষ্ঠায় উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেন।
৯। আল্লামা আব্দুল হাই লাক্ষনৌভি (رحمة الله) ওফাত.১৩০৪হি, তার “আছারুল মারফুআ ফিল আখবারিল মাওদুআহ” (আমি তথ্যটি মাকতুবাতুল শামেলা থেকে নিয়েছি) ৪২-৪৩ পৃষ্ঠায় ইমাম আব্দুর রাযযাক (সাঃ) এর সনদ সহকারে উক্ত হাদিসটি উল্লেখ করেন।
পাঠকবৃন্দ। আপনারা লক্ষ্য করুন, প্রচলিত উক্ত তিনটি বইয়ের লেখকগণ অসংখ্য স্থানে তাদের গুরু হিসেবে মাওলানা আব্দুল হাই লাক্ষনােভী সাহেবের উক্ত গ্রন্থ হতে অসংখ্য স্থানে দলীল গ্রহণ করেছেন, কিন্তু উক্ত হাদিসটির বেলায় তারা উক্ত রায়টিকে এবং উক্ত হাদিসটিকে কি গ্রহণ করেছেন? না, বরং সত্যকে ধামাচাপা দিয়েছেন। তাই আল্লাহ তা’য়ালার নিকট এই সমস্ত সত্য গােপনকারী নামধারী আলেম হতে পানাহ চাই।
১০। আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله)ওফাত,১০১৪হি.“আল মাওরিদুর রাভী ফিল মাওলীদিন নবী” গ্রন্থের (মাকতুবাতুল তাওফিকহিয়্যাহ ,কাহেরাহ, মিসর থেকে মুদ্রিত) ২২ পৃষ্ঠায় উক্ত হাদিসটি উল্লেখ করেছেন।
১১। আল্লামা ইবনে হাজর হায়তামী আল মক্কী (رحمة الله)ওফাত.৭৯৪হিতার “ফতােয়ায়ে হাদীসিয়্যাহ” গ্রন্থে উক্ত হাদিসটি ইমাম আবদুর রাযযাক(رحمة الله)’র * প্রথমে তিনি হাদিসটি ৪৪পৃষ্ঠায় (শামেলা) এবং ৩৮০পৃষ্ঠায় সংকলন করেন যা। মুহাম্মদ কারখানা, করাচী, পাকিস্তান হতে প্রকাশিত।
১২। আল্লামা শায়খ ইউসূফ নাবহানী (رحمة الله) স্বীয় প্রসিদ্ধ সিরাত ৭ “হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামীন” এর ৩২-৩৩ পৃষ্ঠায় উক্ত হাদিসটি উল্লেখ করে
১৩-১৫। আল্লামা শায়খ ইউসূফ বিন নাবহানী (رحمة الله) স্বীয় অন্যতম প্রসিদ্ধ “যাওয়াহিরুল বিহার” এর ৩য় খন্ডের ৩৭৭ পৃষ্ঠায় এবং ৩/৩১২ এবং ২/২১৯ পৃষ্ঠায় ইমাম আব্দুর রাযযাক এর সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন।
১৬। আল্লামা আরেফ বিল্লাহ আবদুল গণী নাবলুসী (رحمة الله) স্বীয় প্রসিদ্ধ গ্রন্থ হাদীকাতুন নাদিয়্যাই শরহে আত তারীকাতুল মুহাম্মাদিয়্যাহ” গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ৭৫ পৃষ্ঠায় ইমাম আব্দুর রাযযাক (رحمة الله) এর “মুসান্নাফ” গ্রন্থের বরাতে উক্ত হাদিসটি হযরত যাবের (رضي الله عنه) এর সূত্রে উল্লেখ করেছেন।
১৭। আল্লামা শায়খ ইউসূফ বিন নাবহানী (رحمة الله) স্বীয় প্রসিদ্ধ গ্রন্থ “আনওয়ারে মুহাম্মাদিয়া” গ্রন্থের ৯ পৃষ্ঠায় উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করার পর বলেন, উক্ত হাদিসটি ইমাম আব্দুর রাযযাক সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন।
১৮। ইমাম নাওয়াভী (رحمة الله)ওফাত.৬৭৭হি, স্বীয় বিখ্যাত সিরাত গ্রন্থ “আদ্দুরারুল বাহিয়্যাহ” গ্রন্থের ৪-৮ পৃষ্ঠায় ইমাম আবদুর রাযযাক (رحمة الله) এর সনদে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
১৯। আল্লামা আহমদ আবদুল জাওয়াদ দামেস্কী (رحمة الله) স্বীয় সিরাজুম মুনীর গ্রন্থের ১৩-১৪ পৃষ্ঠায় ইমাম আবদুর রাযযাক (رحمة الله) এর বরাতে উক্ত হাদিসটি উল্লেখ করেছেন।
২০। ইমাম মুহাম্মদ মাহদী আল-ফার্সী সুফী (رحمة الله)ওফাত.১২২৪হি, তার “দালায়েলুল খায়রাত” গ্রন্থের ব্যাখ্যা গ্রন্থ “মাতৃালিউল মুসাররাত ” এর ২১ পৃষ্ঠায় ইমাম আবদুর রাযযাক (رحمة الله) এর বরাতে উক্ত হাদিসটি উল্লেখ করেছেন।
২১। আরেফ বিল্লাহ শায়খ আবদুল করিম জলীলী (رحمة الله) স্বীয় বিখ্যাত গ্রন্থ,
الناموس الاعظم والقاموس الأقدام في المعرفة قدر النبي صلى الله عليه و سلم
২৪১ পৃষ্ঠায় ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) এর বরাতে ও ইমাম আবদুর রাযযাক (رحمة الله) এর বরাতে উক্ত হাদিসটি উল্লেখ করেছেন।
২২। মুহাদ্দিস ইমাম খরপূতী (رحمة الله) স্বীয় প্রসিদ্ধ গ্রন্থ “কাসীদাতুশ শাহাদাহ শরহে কাসীদায়ে বুরদাহ” গ্রন্থের পৃষ্ঠা নং ১০০ এ ইমাম আবদুর রাযযাক (رحمة الله) এর বরাত দিয়ে উক্ত হাদিসটি উল্লেখ করেছেন।
২৩। আল্লামা শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী (رحمة الله) স্বীয় বিখ্যাত গ্রন্থ *মাতে ইলাহিয়্যাহ এর ১৯ পৃষ্ঠায় ইমাম আব্দুর রাযযাক সূত্রে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
২৪। আল্লামা ইমাম মাহমুদ আলুসী ( “তাফসীরে রুহুল মায়ানী” তে সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় ১৭ পারার ৯ম খন্ডের ১৭৭ পৃষ্ঠায় হযরত যাবের (رحمة الله) এর সূত্রে উক্ত হাদিস করেছেন।
২৫। আল্লামা কাযি হােসাইন ইবনে মুহাম্মদ দিয়ার বকরী (رحمة الله) তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ “কিতাবুল খামীস ফি আহওয়ালি আনফাসে নাফীস”২০ পৃষ্ঠায় কিছুটা শব্দ পরিবর্তন করে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেন।
২৬। ইমাম ইবনুল হাজ্জ আল মালেকী (رحمة الله) ওফাত.৭৩৭হি স্বীয় প্রসিদ্ধ গ্রন্থ “আল-মাদখাল” এর ২য় খন্ডের ৩২ পৃষ্ঠায় (দারুল ইহইয়াউত তুরাস আত আরাবী,বয়রুত,লেবানন হতে প্রকাশিত) উক্ত হাদিসটি ইমাম আব্দুর রাযযাকের সনদে বর্ণনা করেছেন।
২৭। আল্লামা ইবনে হাযার হায়তামী মক্কী (رحمة الله) ওফাত.৭৯৪হি.”শরহে শামায়েল” গ্রন্থের ১/১৪৫ পৃষ্ঠায় ইমাম আব্দুর রাযযাকের বরাতে হযরত যাবের বিন আব্দুল্লাহ আনসারী (رضي الله عنه) হতে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
২৮। আল্লামা শরীফ সৈয়দ আহমদ বিন আব্দুল গণী বিন উমর দামেস্কী (رحمة الله) তার একাধিক গ্রন্থে শায়খ ইউসুফ নাবহানী (رحمة الله) তার কিতাবে সংকলন করেছেন।
২৯। ইমাম আরিফ বিল্লাহ শায়খ আলী দুদাহুল বুসনভী (رحمة الله) তার خلاصة الأثرগ্রন্থে ইমাম আব্দুর রাযযাক (رحمة الله) হতে সংকলন করে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
৩০। আরিফ বিল্লাহ শায়খ আব্দুল্লাহ বানুভী রুমী (رحمة الله) যিনি “কাশফুল যুনুন” গ্রন্থের লেখকের তার একটি গ্রন্থের উদ্ধিতি দিয়ে শায়খ ইউসুফ নাবহানী তা যাওয়াহিরুল বিহার গ্রন্থে হাদিসটি ইমাম আব্দুর রাযযাকের সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
৩১। আল্লামা ইবনে হাযার হায়তামী আল মক্কী (رحمة الله) ওফাত.৭৯৪হিতা” আন্-নেয়ামাতুল কুবরা আলাল আলাম” গ্রন্থেও দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় হযরত যাবে ” আব্দুল্লাহ আনসারী (رحمة الله) হতে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন, যা মীর মোহাম্মদ কারখানা, করাচী, পাকিস্তান থেকে প্রকাশিত হয়েছে। ফতােয়ায়ে হাদিসিয়ায় উক্ত গ্রন্থটি তারা উল্লেখ করে অনেক উপকার করেছেন।
৩২।ইমাম আবু সাদ নিশাপুরী খারকুশী (رحمة الله) যার ওফাত হচ্ছে ৪০৭ তিনি তার প্রসিদ্ধ সিরাত গ্রন্থ “শরফুল মুস্তফার ১/৩০৭পৃষ্ঠায় (যা দারুল কল ইসলামিয়্যাহ, মক্কাতুল মুকাররমা হতে প্রকাশিত, শামেলা) হাদিসটি সংকলন করেছেন।
৩৩ ইমাম ইয়াহইয়া বিন আবি বকর বিন মুহাম্মদ বিন বিন ইয়াহইয়া আলমরী আল-হারদ্বী (رحمة الله) যার ওফাত হচ্ছে ৮৯৩ হিজরীতে তিনি হাদিসটি বাহজাতুল মাহফিল ওয়া বাগিয়াল আমসাল ফি তালখিসুল মু’যিজাত ওয়াল সক ওয়াল শামায়েল” গ্রন্থের ১/১৫ পৃষ্ঠায় (যা দারুস্-সদর, বয়রুত, লেবানন হতে প্রকাশিত,শামেলা) হাদিসটি সংকলন করেছেন।
৩৪.শায়খ মুহাম্মদ বিন খিলাফাত বিন আলী আল-তাইমী (رحمة الله) তার সিরাত গ্রন্থ “হুকুকুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলা উম্মাতি ফি যুউল কিতাৰ ওয়া সুন্নাহ” এর মধ্যে হাদিসটি সংকলন করেন। এটি আল-মুমলাকাতুল আরাবিয়্যাহ রিয়াদ,সৌদি আরব হতে প্রকাশিত।
৩৫.ইমাম জুরকানী (رحمة الله) ওফাত.১১২২হি, তার শরহুল মাওয়াহে এর আরেক স্থানে (৫/২৬১পৃ. যা দারুল কুতুব ইলমিয়্যাহ,বয়রুত,লেবানন হতে প্রকাশিত) হাদিসটি সংকলন করেছেন।
৩৬.ইমাম ইয়াদরুসী (رحمة الله) তার “তারীখে নুরুস সফর” গ্রন্থে হাদিসটি সংকলন করেছেন।
৩৭.ইমাম আলুসী বাগদাদী (رحمة الله) স্বীয় তাফসীরে রুহুল মায়ানী’ প্রথমে সূরা ফাতেহার তাফসীরেই (১/৫৪পৃষ্ঠায়,শামেলা) হযরত যাবের (رضي الله عنه) হাদিসটি সংক্ষেপে ইঙ্গিত দিয়ে বর্ণনা করেছেন।
৩৮.ইমাম সাভী আল-মালেকী (رحمة الله) যার ওফাত,১২৪১হি. তার “হাশিয়াতুল সাভী আলাল শরহুল সগীর”গ্রন্থের ৪/৭৭৮পৃষ্ঠায় হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
৩৯. ইমাম মুহাম্মদ মাহদী আল-ফাসী সুফী (رحمة الله) ওফাত,১২২৪হি, তার লিখিত “আল-বাহারুল মুদিদ ফি তাফসিরুল মাজিদ” এর ৫/২৭৪পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় ইমাম আবদুর রাযযাক (رحمة الله) এর বরাতে উক্ত হাদিসটি উল্লেখ করেছেন।
৪০.ইমাম শিহাবুদ্দীন খিফাযী হানাফী (رحمة الله) ওফাত,১০৬৯হি, তার স্বীয় তাফসীর হাশিয়াতুল শিহাব আ’লা তাফসিরুল বায়যাভী” এর (৪/১৪৩পৃষ্ঠায়,সুরা আনআমের এক আয়াতের ব্যাখ্যায়) মধ্যে হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
৪১.আহলে হাদিস শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী তার একাধিক গ্রন্থে তা মনে বর্ণনা করেছেন। তার সু প্রসিদ্ধ সহিহ হাদিসের গ্রন্থ “সিলসিলাতুল আহাদিসুস সহীহা এর ১৮২০পৃষ্ঠায় হাদিস নং ৪৫৮ এ হাদিসটি বর্ণনা করেন। এছাড়া আল অপর আরেকটি গ্রন্থ আলবানী ফিল আকায়েদ”এর ৩৮১৬প, প্রশ ৩/৮১৮পৃ. প্রশ্ন নং-২৮৪ এ সহ এই কিতাবটির মােট ৯ স্থানে এ হাদীস টি বর্ণনা করেছেন।
৪২. সৌদি আরবের আলেমদের সম্মেলিত ফাতওয়ার কিতাব “কুরাতুল আইন ফাতওয়ায়ে উলামাউল হারামাইন” (যার ১/৩২৫ পৃষ্ঠায়,যা মাকতাবাত তাযারিয়্যাহতুল কোবরা, মিশর হতে প্রকাশিত) যা সংকলন করেছেন শায়খ মস বিন ইবরাহিম আল-মাগরীবী আল-মিশরী আল-মালেকী,যার ওফাত হলাে,১২৯২হিজরীতে। এ কিতাবটি এখন মাকতুবাতুল শামেলাতেও পাওয়া যায়।
৪৩.আহলে হাদিস শায়খুল তৈয়্যব আহমদ হাতিয়্যাহ তিনি তাঁর “তাফসীরে শায়খ আহমদ হাতিয়্যাহ” এর ৩/৩৯৫ পৃষ্ঠায় বর্ণনা করেছেন।
৪৪.আল্লামা ইমাম আহমদ রেযা খাঁন ফাযেলে বেরলভী (رحمة الله) ওফাত,১৯২১খৃ.তার “নূরুল মােস্তফা” গ্রন্থে ৫-৭ পৃষ্ঠায় বিস্তারিত ভাবে ইমাম আবদুর রাযযাক(رحمة الله)’র সূত্রে এবং ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) দালায়েলুল নবুয়ত এর বরাতসহ অনেক কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে উক্ত হাদিসটি উল্লেখ করেছেন।
৪৫.আল্লামা সৈয়দ আহমদ সাঈদ কাযেমী (رحمة الله) মিলাদুন্নবী গ্রন্থের ২২ পৃষ্ঠায় ইমাম আব্দুর রাযযাকের সূত্রসহ আরাে অনেক কিতাবের উদ্ধৃতি দিয়ে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
৪৬.ইসলামী ইতিহাসবিদ আল্লামা আব্দুল হামিদ মুহাম্মদ যিয়াউল্লাহ কাদেরী (রহঃ) স্বীয় গ্রন্থ “ওহাবী মাযহাব কী হাকীকত’ (উর্দু) এর ৬৪১ পৃষ্ঠায় হযরত যাবের (رضي الله عنه) এর হতে অনেক সূত্রে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
৪৭.আল্লামা মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন নঈমী (رحمة الله) স্বীয় অন্যতম গ্রন্থ “রিসালাম নূর” এর ১৯ পৃষ্ঠায় যাবের (رضي الله عنه) হতে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
৪৮.মাওলানা কেরামত আলী জৈনপুরী সাহেব তার উল্লেখযােগ্য গ্রন্থ “ফি মওলিদে খাইরিল বারিয়্যাহ” এর ৫ পৃষ্ঠায় হযরত যাবের (رضي الله عنه) বর্ণনায় উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
৪৯.দেওবন্দেরঅন্যতম আলেম মাওলানা আশরাফ আলী থানবী সাহেব “নুশরাত্বিব”এর ২৫ পৃষ্ঠায় ইমাম আবদুর রাযযাক (رحمة الله) এর সূত্রে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
৫০.দেওবন্দীদের অন্যতম শায়খুল হাদিস ইদ্রিস কালভী সাহেব “মাকামাত ফি হাদিসিয়্যাহর “১ম খন্ডের ২৪১ পৃষ্ঠায় আবদুর রাযযাক (رحمة الله) এর সূত্রে উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
৫১. পাকিস্তানের ওহাবী দেওবন্দী মুহাদ্দিস সরফরায খাঁন সফদও ‘নূর আওর বাশার এর ৩২ (উর্দু) পৃষ্ঠায় বর্ণনা করে হাদীসের সত্যতা স্বীকার করেছেন। কিন্তু তার মাথা ব্যথা হলাে ইমাম আবদুর রাযযাক (رحمة الله) নাকি শিয়া পন্থী, তার জবাব সামনে আলােচনায় আসবে।
৫২। ভারতীয় উপমহাদেশের ওহাবী মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা শাহ ইসমাঈল দেহলভী সাহেব তার ‘রেসালায়ে একরােজী’ পৃষ্ঠা নং ১১ এ উক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন।
৫৩। ‘তাফসীরে নূরুল কোরআন’ এর লেখক মাওলানা আমিনুল ইসলাম সাহেব“নূর নবী” বইয়ের ১৫ পৃষ্ঠায় ইমাম আবদুর রাযযাক (رحمة الله) এর সূত্রে উক্ত হাদিসটি তার গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। অপরদিকে তিনি মাওলানা আশরাফ আলী থানবী সাহেবের নশরুত্তীব এর হুবহু বাংলা অনুবাদও করেছেন আর তার নাম তিনি দিয়েছেন “যে ফুলের খুশবােতে সাড়া জাহান মাতােয়ারা এ পুস্তুকটি এখনও বাংলা বাজার ইসলামী টাওয়ারে পাওয়া যায়।
৫৪.বর্তমানের দেওবন্দীদের তথাকথিত শাইখুল হাদিস মুফতি মনসুরুল হক মাসিক আদর্শনারীতে (২০১২ইং এর সিরাতুন্নবী (ﷺ) সংখ্যায় দরসে হাদিসে) এক পথীয়ে হযরত যাবের (رضي الله عنه)’র হাদিসটি সংক্ষেপে ইমাম আবদুর রাষ্যকের সূত্রে সংকলন করেন।
সূত্র, প্রমানিত হাদীস কে জাল বানানোর স্বরুপ উন্মোচন
মূফতি মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাহাদুর।