আজকে আমাদের আলোচনাটাও আমাদের বাসার টেলিভিশন নিয়ে। যে জিনিসগুলো আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের নিষেধ করি, সে জিনিসগুলো নাটক-সিনেমায় দেখানো হয়। বিয়ার, মদের বিজ্ঞাপন দেখেন নিশ্চয়ই আপনারা? ই.এস.পি.এন.-এ ক্রিকেট দেখার সময় সাথে দেখেন না এগুলো? বাবা-ছেলে-মেয়ে বসে একসাথে দেখেন। আরও ইঙ্গিতপূর্ণ জিনিসও দেখেন। এখানে যা যা বলেছে তার একটা কথাও মিথ্যা না। এবং সে (টিভি) যখন এগুলো বলে, আমরা সবাই পাশাপাশিই বসে থাকি – একটু বিব্রত বোধ করি, কিন্তু হজম করে নেই। সে আমাদের সমস্ত ইসলাম বিরোধী, নৈতিকতা বিরোধী জিনিস বলে যায় এবং আমরা হজম করে নেই। আজকাল পত্রিকায় দেখি: যে সমস্ত খুন হচ্ছে, (আমাদের বাসায় আলহামদুলিল্লাহ্ বার বছর টিভি নেই – তাই আমি দেখি না, কিন্তু) এগুলো নাকি সমকালীন সিরিয়ালগুলোর উপজীব্য! বাংলাদেশের পত্রিকাপাখুললে কে কার স্বামী বা স্ত্রীকে মারলো, পরকীয়া প্রেম এগুলোই দেখা যায় – এটাই বলা হয়েছে এই লেখায়। আসুন, আমরা এখন আমাদের মূল আলোচনায় যাই।
আমরা “STRANGER IN OUR HOMES: TV AND OUR CHILDREN’S MIND” বইটা নিয়ে একটু কথা বলব। বইটার ভূমিকা ও সমাপ্তি লিখেছেন ইসলামের একজন পশ্চিমা ‘আলিম। উনি মালিকি মাযহাবের ও সুফীপন্থী। তাঁর নাম: শায়খ হামযা ইউসুফ হাঃ Hamza Yusuf। ক্যালিফোর্নিয়াতে “যায়তুনা” নামে একটি প্রতিষ্ঠান আছে তাঁর। এই বইটা যায়তুনা ইন্সটিটিউট থেকে ২০০০ সালে বের করা হয়েছে। বইটার সামনে পিছনে তার লেখা আছে, কিন্তু মূল বক্তব্যটা সুজান আর. জনসন বলে একজন মহিলার। তিনি ডক্টর অফ মেডিসিন(MD), এসিস্ট্যান্ট ক্লিনিক্যাল প্রফেসর অফ পেডিয়্যাট্রিক্স, ডিভিশন অফ বিহেভিয়রাল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পেডিয়্যাট্রিক্স। আমরা আজকে এই বইয়ে সংযুক্ত তার একটা লেখা নিয়ে কথা বলব, যা ১৯৯৯ সনের জানুয়ারির ৫ তারিখে সানফ্রানসিসকোতে তিনি একটা বক্তৃতার মাধ্যমে উপস্থাপন করেছিলেন।
তিনি শিশুদের মনস্তত্ত্ব নিয়ে, স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে, কেন তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ নাই, কেন কিছু জিনিস শিখছে, কিছু জিনিস শিখছে না – এসব বিষয়ে অনেক গবেষণা করেছেন। তিনি প্রথমে বলছেন যে, মা হওয়ার আগে পর্যন্ত বিষয়টা তিনি সেভাবে বুঝতে পারেন নি। তিনি এক জায়গায় সাত বছর চাকরি করেছেন এবং আট থেকে বার বছর বয়সী যেসব বাচ্চাদের শিখতে অসুবিধা হয়, তাদের নিয়ে গবেষণা করেছেন – শত শত বাচ্চাদের দেখেছেন, যারা মনোযোগ দেয় না বা পাঠ্য বিষয়গুলো ঠিকমত ধরতে পারে না; কিন্তু যেসব কাজে শারীরিক অঙ্গভঙ্গির প্রয়োজন হয়, যেমন ছবি আঁকা, লেখালেখি বা জ্যামিতিক আকৃতি নিয়ে খেলা – এসবে তারা ভালো করছে। আবার অনেক বাচ্চাই অন্যদের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে না।