জিজ্ঞাসা–৮৯৫: আসসালামু আলাইকুম। অযুর দোয়া সম্পর্কে নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) কি বলেছেন?– Amzad
জবাব: وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
এক. অযুর পূর্বে এবং পরে দোয়া পড়া রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে প্রমাণিত আছে। সুতরাং এই দুই সময়ে দোয়া পড়া সুন্নাত। অযুর পূর্বে দোয়া হল, বিসমিল্লাহ বলে অযু শুরু করা। রাসূলুল্লাহ ﷺবলেন,
لا وُضُوءَ لِمَنْ لَمْ يَذْكُرْ اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهِ
যে ব্যক্তি অযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ বলবে না, তার অযু পরিপূর্ণ হবে না। (তিরমিযি ২৫)
দুই. অযুর শেষে কী দোয়া পড়া হবে; এবিষয়ে বেশ কয়েকটি হাদিস রয়েছে। সকল হাদিসের সমষ্টিতে দোয়াটি এভাবে দাঁড়ায়–
: أَشْهَدُ أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ، اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَوَّابِينَ ، واجْعَلْني مِنَ المُتَطَهِّرِينَ ، سُبْحانَكَ اللَّهُمَّ وبِحَمْدِكَ ، أشْهَدُ أنْ لا إلهَ إِلاَّ أنْتَ ، أسْتَغْفِرُكَ وأتُوبُ إِلَيْكَ
‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোনো শরিক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ ﷺ তাঁর গোলাম ও রাসুল। হে আল্লাহ! আমাকে তাওবাকারীদের ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন। মহা পবিত্র আপনি হে আল্লাহ্! আপনার প্রশংসার সাথে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আমি আপনার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনার দিকেই ফিরে যাচ্ছি (অর্থাৎ তাওবা করছি)।’
যেমন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ يَتَوَضَّأُ فَيُبْلِغُ أَوْ فَيُسْبِغُ الْوَضُوءَ ثُمَّ يَقُولُ : أَشْهَدُ أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيكَ لَهُ ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ، إِلا فُتِحَتْ لَهُ أَبْوَابُ الْجَنَّةِ الثَّمَانِيَةُ يَدْخُلُ مِنْ أَيِّهَا شَاءَ
তোমাদের যে ব্যাক্তি কামিল বা পূর্ণরূপে উযূ করে এই দোয়া পাঠ করবে, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি এক, তাঁর কোনো শরিক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ ﷺ তাঁর গোলাম ও রাসুল।’ তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে যাবে এবং যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা সে জান্নাতের প্রবেশ করতে পারবে। (মুসলিম ২৩৪)
ইমাম তিরমিযি রহ. উক্ত দোয়ার নিম্নের অংশ অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন,
اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَوَّابِينَ ، واجْعَلْني مِنَ المُتَطَهِّرِينَ
‘হে আল্লাহ! আমাকে তাওবাকারীদের ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন।’ (তিরমিযি ৫৫)
আর উক্ত দোয়ার শেষাংশ ইমাম নাসাঈ তাঁর আল-কুবরা (৯৯০৯), হাকিম (১/৫৬৪) গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূল ﷺ বলেছেন,
مَنْ تَوَضَّأَ فَقَالَ: سُبْحَانَكَ اللهُمَّ، وَبِحَمْدِكَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ، كُتِبَ فِي رَقٍّ ثُمَّ طُبِعَ بِطَابَعٍ فَلَمْ يُكْسَرْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَة
যে ব্যক্তি ওযূ করার পর বলবে, ‘মহা পবিত্র আপনি হে আল্লাহ্! আপনার প্রশংসার সাথে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। আমি আপনার নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনার দিকেই ফিরে যাচ্ছি (অর্থাৎ তাওবা করছি)।’ তাহলে তার জন্য কাগজে তার আমল নামা লিখে এমনভাবে মুদ্রণ করা হবে, যা ক্বিয়ামত পর্যন্ত নষ্ট হবে না।
উল্লেখ্য, অযুর মাঝখানে বিভিন্ন অঙ্গ দোয়ার সময় যে দোয়াগুলো পড়া হয়। সেগুলো অযুর দোয়া হিসেবে হাদিসে আসে নি। তবে মুফতি তাকী উসমানী দা. বা. বলেন, এই দোয়াগুলো বিভিন্ন সময়ে রাসুলুল্লাহ ﷺ পড়েছেন বলে প্রমাণিত আছে। তাই এগুলো পড়া বেদআত হবে না; বরং বরকতের কারণ হবে। (ইসলাহী খুতুবাত ১৩/১২৬)
والله اعلم بالصواب
উত্তর দিয়েছেন
মাওলানা উমায়ের কোব্বাদী




Users Today : 286
Users Yesterday : 767
This Month : 14708
This Year : 186579
Total Users : 302442
Views Today : 25894
Total views : 3602637